রাতারাতি ইসরাইলের বর্বরতায় হতবাক দেশটির স্থানীয়রা

বিদেশে এখন
0

গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর রাতারাতি এমন বর্বরতায় হতবাক খোদ ইসরাইলের সাধারণ মানুষ। তেল আবিবের রাজপথে বিক্ষোভে নেমে তারা বলছেন, দেশের গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাচ্ছে। হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে নিউইয়র্ক, প্যারিস এমনকি জর্ডানের আম্মানেও। গণহত্যায় পশ্চিমাদের সমর্থন আর আরব বিশ্বের নীরবতায় বাকরুদ্ধ তারা। বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনেই এমন বর্বরোচিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ড চালানোর সাহস পেয়েছেন নেতানিয়াহু।

পবিত্র রমজান মাসে নেতানিয়াহু বাহিনীর এমন নৃশংস বর্বরতা সহ্য করতে পারছেন না খোদ সাধারণ ইসরাইলিরা। দীর্ঘদিন ধরেই তেল আবিবসহ বিভিন্ন প্রান্তে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলেও এবার গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আবারও হামলা শুরুর প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছেন সাধারণ ইসরাইলিরা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয় বিশাল র‌্যালি। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, দেশের গণতন্ত্রকে শেষ করে দিতে চাইছেন নেতানিয়াহু।

ইসরাইলের স্থানীয় একজন বলেন, 'নেতানিয়াহুসহ তার প্রশাসনে যারা আছেন, সবাই চাচ্ছেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক। গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাক, বন্দিদের সঙ্গে যা খুশি তাই হোক।'

অন্য একজন বলেন, 'আমরা বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে। সরকার কি আসলে আমাদের জন্য কাজ করে? সাধারণ মানুষকে নিয়ে ভাবে? আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে।'

শুধু ইসরাইল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেতে গাজা উপত্যকায় নেতানিয়াহুর এই গণহত্যায় রাস্তায় নেমেছেন খোদ নিউইয়র্কের বাসিন্দারা। টাইমস স্কয়ারে জড়ো হয়েছেন ইহুদি জনগোষ্ঠীসহ শত শত মানুষ।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় একজন বলেন, 'ইহুদিদের বিরুদ্ধে যেই প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, তার বিরোধিতা করি। এটা ধর্মীয় যুদ্ধ না। শত বছর ধরে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের সঙ্গে বাস করেছি আমরা। জায়োনিজম এসে ৭৬ বছর ধরে নির্মমতা শুরু করেছে।'

অন্য একজন বলেন, 'কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। গণহত্যার জন্য ইসরাইল আর যুক্তরাষ্ট্র সবুজ সংকেত দিয়ে যাচ্ছে। উপত্যকায় পানি, খাবার, বিদ্যুৎ, ওষুধ কিছুই নেই। পুরো জনগোষ্ঠীকে শেষ করে দেয়ার পাঁয়তারা চলছে।'

ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে ফ্রান্সের সাধারণ মানুষও।

ফ্রান্সে বসবাসকারী একজন বলেন, '৪০০ মানুষকে একরাতে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি অবাক হয়েছি। নেতানিয়াহু সবাইকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন। যুদ্ধবিরতিকে সম্মান করা প্রয়োজন।'

বিক্ষোভ হয়েছে জর্ডানের আম্মানেও। তাদের দাবি, গাজায় যেই গণহত্যা হচ্ছে, এখানে পুরো বিশ্ব জড়িত, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব।

স্থানীয় একজন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র সবার শত্রু। তাদের ছাড়া ইসরাইল এই কাজ করতে পারতো না। আরব বিশ্ব নীরব। ফিলিস্তিনের নতুন প্রজন্ম চুপ থাকবে না।'

হামাস দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়নি দাবি করে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে গাজায় পুরোদমে হামলা শুরু করে ইসরাইল। অন্যদিকে, হামাস যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার জন্য হামাস দোষারোপ করছে ইসরাইলকে। পুরো ঘটনায় রমজান মাসে আরও একবার গণহত্যার শিকার উপত্যকাটির বাসিন্দারা।

এসএস