আমন্ত্রিত অতিথি এবং সফররত প্রেসিডেন্টের মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডা ও নজিরবিহীন অসদাচরণে সমালোচনার ঝড় ওঠে বিশ্বজুড়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আক্রোশে কোণঠাসা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন বৈঠক অমীমাংসিত রেখেই।
এ ঘটনার পরই অবশ্য সুর নরম করেছিলেন জেলেনস্কি। ফলশ্রুতিতে সৌদি আরবের জেদ্দায় আজ (মঙ্গলবার আলোচনার টেবিলে দেখা যাবে যুক্তরাষ্ট্র আর ইউক্রেন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে বিরোধ মেটাতে পারবেন জেলেনস্কি?
বিশ্লেষকরা বলছেন, কোন যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো মূল্যে চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা চাইলেও স্বার্থ-বিরোধী কোন খারাপ চুক্তি চায়না কিয়েভ।
চ্যাথাম হাউজের রাশিয়া-ইউরেশিয়া প্রকল্প পরিচালক জেমস নিক্সেই বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কোনো চুক্তি না হওয়ার চেয়ে একটা খারাপ চুক্তি হলে তাও ভালো। কিন্তু ইউক্রেনীয়রা মনে করে, কোন চুক্তি না হওয়াও ভালো, তাও খারাপ চুক্তি চলবে না। দুই দেশের উত্তেজনার মূলে এটাই। আলোচনা এগিয়ে নিতে অচলাবস্থা ভাঙা দরকার আগে। কিন্তু ব্যক্তিগত বা দেশপ্রেম, কোনো দিক থেকেই দেশকে বেচতে পারবেন না জেলেনস্কি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইলেও সেটা সম্ভব নয়।’
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পুনর্বহালে রাশিয়ার সাথে আংশিক অস্ত্র-বিরতির প্রস্তাব দিতে পারে ইউক্রেন। সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ড্রোন ও দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং কৃষ্ণসাগরে বৈরিতার অবসানে প্রস্তাব দিতে পারে কিয়েভ। সূত্রের দাবি, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতকেই আপাতত অগ্রাধিকার দিচ্ছে কিয়েভ। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তা ইউক্রেনের স্বাধীনতা কিংবা আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিনিময়ে নয় বলেও মত বিশ্লেষকদের।
জেমস নিক্সেই বলেন, ‘যদি যুদ্ধে ইউক্রেনের পূর্ণ পরাজয় ঘটে, তাহলে অন্য বিষয়। তা না হলে জেলেনস্কি পদত্যাগ করলেও তার মানে এই নয় যে রাশিয়ার কোনো পুতুল তার জায়গায় বসে যাবে। আরও অনেক জেলেনস্কি আছেন। অনেক মেধাবী আছেন যারা দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতা রক্ষায় এগিয়ে আসবেন।’
মার্কিন প্রশাসনের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে এ আলোচনার উদ্দেশ্য মস্কোর জন্য কিয়েভ কতোটা ছাড় দিতে প্রস্তুত, সেটি যাচাই করা। এবার আলোচনা ব্যর্থ হলে ইউক্রেনের ওপর একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া, এমন শঙ্কা কিয়েভের।