যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এতো টানাপড়েন, ইউক্রেনে সেনা অভিযান শুরুর পর এই প্রথম। কারণ ক্ষমতায় এসেই যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ইউক্রেন আর সামরিক সহায়তা পাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের। বেশ কয়েকটি বক্তব্যে এই বার্তা আরও স্পষ্ট করে ডোনাল্ড ট্রাম্প চেয়েছেন ইউক্রেনের বিরল খনিজ। ওভাল অফিসে জেলেনস্কি–ট্রাম্পের বাকবিতণ্ডার মুখ্য কারণগুলোর একটিও সামরিক সহায়তায় অনিশ্চয়তার বিষয়টি। সৌদি আরবে মার্কিন ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের বৈঠককে সামনে রেখে আবারো একই বার্তা দিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘এই যুদ্ধের একমাত্র সমাধান কূটনীতি। বিরল খনিজ চুক্তির বিষয়টি টেবিলে আছে। আলোচনার অংশ এই চুক্তি। প্রেসিডেন্ট চাইছেন এই চুক্তি হোক। কিন্তু আরও কাজ রয়েছে। এটাই একমাত্র উদ্দেশ্য না। ইউক্রেন এখনও আমাদের সামরিক সহায়তা পাচ্ছে। সামরিক সহায়তা স্থগিতের বিষয়টির সমাধান এতো জলদি আসবে না।’
সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা থাকলেও এই বক্তব্যের পর তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জেদ্দার এই আলোচনায় সামরিক ইস্যুতে কোন সমাধান আসছে না। জেলেনস্কি হারানো অঞ্চল ফিরে পাওয়া নিয়ে আশাবাদী হলেও রুবিও বলেন, পুরো ইউক্রেন রাশিয়া দখলে নিতে পারে না। তবে ২০১৪ সালের পর রাশিয়ার দখল করা এলাকাগুলো মুক্ত করা ইউক্রেনের জন্য কঠিন হবে বলেও মনে করেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘ইউক্রেনের পরিস্থিতি বুঝে একটা ধারণা নিয়েছি, তারা আসলে কি করতে চাইছে। আপনি চাইলে যুদ্ধবিরতি কিংবা যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত দুই পক্ষ না চাইবে। হয়তো চুক্তিতে বিশাল অর্জন আসবে না। কিন্তু আমরা বৈঠকে বসে মানচিত্র আঁকবো না। চিন্তা করবো, ইউক্রেনের কি প্রয়োজন। রাশিয়ার কাছেও উপায় খুঁজবো। বুঝতে পারবো, দুই পক্ষই সম্মতি থেকে কতটুকু দূরে আছে।’
ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা দেয়া দেশ পিছু হটায় দেশটিতে হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। ব্যালিস্টিক মিসাইলের বহর ছুড়েছে রাশিয়ার ইউক্রেন অধ্যুষিত কুরস্কে। কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলা হচ্ছে। মস্কোতে পাল্টা ড্রোন হামলা চালিয়েছে কিয়েভ।
সৌদি আরবে ইউক্রেন-মার্কিন প্রতিনিধিদের বৈঠককে সামনে রেখে প্যারিসে ৩০ টি ইউরোপ ও ন্যাটো সদস্য দেশের সেনা কর্মকর্তারা জরুরি বৈঠকে বসেছেন। বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি, ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা ও নিরাপত্তা সহায়তা অব্যাহত রাখা। শুধু তাই নয়, রাশিয়াসহ বহির্বিশ্বের হুমকি মোকাবিলায় ইউরোপের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে হবে আলোচনা।