স্বৈরশাসক আসাদের পতনের পর সিরিয়ার ক্ষমতা আসে বিদ্রোহীদের হাতে। পরে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন গোষ্ঠীর প্রধান আহমেদ আল শারা। সিরিয়ার অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর আশ্বাস দেন তিনি।
তবে হুট করেই ফের অশান্ত সিরিয়া। অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আসাদের আলাউইত সম্প্রদায়ের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ৪ দিনের সংঘর্ষে প্রাণ হারান হাজারের বেশি মানুষ। যাদের মধ্যে ৭৪৫ জনই বেসামরিক নাগরিক।
চলমান এই সংঘাত সিরিয়ার নতুন সরকারকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। সহিংসতায় জড়িত সবাইকে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেন প্রেসিডেন্ট আল শারা। তিনি সবাইকে শান্তি পথে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার আগের অবস্থায় আর ফিরে যেতে চায় না। যারা বেসামরিক মানুষদের হত্যা করেছে, দেশের ক্ষতি করেছে, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তদন্তের মাধ্যমে তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’
এদিকে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করার আশ্বাস দিয়েছে প্রতিবেশি দেশ তুরস্ক, জর্ডান, ইরাক ও লেবানন। সিরিয়া থেকে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে তারা। চলমান সংঘাতে আইএস-এর জড়িত থাকার অভিযোগও আছে।
সিরিয়ার লাতাকিয়া, জাবলা ও বানিয়াস শহরে মূলত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। দেশটির গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য মতে, এসব শহরে আসাদপন্থী প্রায় ৫ হাজার বিদ্রোহী লুকিয়ে ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আশেপাশের পাহাড়ি অঞ্চলেও চলে অভিযান।
লাতাকিয়া শহরের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মানুষজন বাইরে বের হচ্ছেন।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘হুট করেই দেশের পরিস্থিতি অবনতি হয়। তবে গেল দুইদিনের তুলনায় এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক।’
আরেকজন বলেন, ‘এ সংঘাতে বাইরের কোনো হাত আছে। অন্তর্বর্তী সরকার সিরিয়ার পুনর্গঠনে দারুণ কাজ করছেন।’
গেল ৪ দিনে বেসামরিক মানুষ হত্যার প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামেন শত শত মানুষ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা। এদিকে, সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দামেস্কের বাসিন্দারা।