রিও কার্নিভালের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

ব্রাজিলের রিও কার্নিভাল এখন দ্য গ্রেটেস্ট ফেস্টিভাল অন আর্থ | এখন
0

কয়েকশ’ বছর ধরে চলা ব্রাজিলের রিও কার্নিভাল এখন দ্যা গ্রেটেস্ট ফেস্টিভাল অন আর্থ'। এই উৎসবটি কেন্দ্র করে কেনই বা ঘটে কয়েক কোটি মানুষের জমায়েত? আয়োজনের বিশেষত্ব বা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটই বা কী?

৪শ' বছরেরও পুরানো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উৎসব ব্রাজিলের রিও কার্নিভাল। যেখানে সাম্বার ছন্দে মেতে ওঠেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। ধর্মীয় প্রথা থেকে শুরু হলেও বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডানা মেলেছে ব্রাজিলের রঙিন এই কার্নিভাল। ঝলমলে আলো আর নান্দনিক নৈপুণ্যে যা এখন রূপ নিয়েছে অভূতপূর্ব এক অধ্যায়ে।

আন্তর্জাতিকভাবে ব্রাজিলিয়ান কার্নিভালের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত রিও ডি জেনিরো। এই শহরে প্রথম কার্নিভালের প্রচলন শুরু হয় ১৭২৩ সালে। প্রাচীন গ্রিসে কার্নিভালের উদ্ভব ঘটেছিল বলে মতান্তর রয়েছে। তবে ব্রাজিলে পর্তুগিজদের মাধ্যমেই এর সূচনা হয়। এটি মূলত খ্রিস্টানদের উৎসব ছিল, তখন লেন্ট শুরু হওয়ার আগে কয়েকদিন ধরে মানুষ খাওয়া-দাওয়া, নাচ এবং গানে মেতে উঠতো। তবে সময়ের ব্যবধানে ব্রাজিলের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যায় রিও কার্নিভাল। বর্তমানে এটি সর্ববৃহৎ উন্মুক্ত উৎসব হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত।

রিও কার্নিভাল বিশ্বের অন্যতম রঙিন উৎসব হওয়ায় এর প্রধান আকর্ষণ স্যাম্বা প্যারেড। এই প্যারেডের উৎপত্তি ১৯৩০ সালের দিকে। এটির সূচনা হয় সাম্বাড্রোমোতে। যার উদ্দেশ্য ছিল ব্রাজিলিয়ান সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধি করে তোলা। এটির মাধ্যমে স্থানীয় স্কুলগুলো নাচ-গান ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। গোটা দুনিয়ার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হিসেবে এর পরিচিতি।

রিও কার্নিভালের সাংস্কৃতিক গুরুত্বও অনেক। প্রতিবছর বসন্তের আগে অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। যাতে ব্রাজিলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জাতিগত বৈচিত্র্যের এক অনন্য প্রতিফলন ঘটে।

কার্নিভালের সঙ্গে সম্পৃক্ত দেশটির পর্যটন খাত। রিও ডি জেনিরো ছাড়াও সাও পাওলো ও মিনাস গেরাইসে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ও দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে। যা দেশটির অর্থনীতির জন্য এক বিশাল আয়ের উৎস। ব্রাজিলের পর্যটন মন্ত্রণালয় আশা করছে এবার ৫ কোটির বেশি লোকের সমাগম হবে কার্নিভালকে কেন্দ্র করে। যা থেকে আয় হতে পারে ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

উৎসব ছাপিয়ে রিও কার্নিভাল এখন সম্প্রীতির প্রতীক। এটিতে ভর করে ব্রাজিল তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরছে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে বিভিন্ন ধরনের কার্নিভাল উদযাপন করা হয়। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও। দেশটির খ্রিষ্টান অধ্যুষিত শহর গোয়ার কার্নিভাল ইতোমধ্যেই বেশ বিখ্যাত হয়ে উঠেছে।

ইএ