যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বাকযুদ্ধ এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার তুঙ্গে। দুই প্রেসিডেন্টের এ বৈঠক কোন রুদ্ধদ্বার আলোচনা নয় বরং পুরোটা হয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সামনে। তাই নজিরবিহীন এই ঘটনার বাকরুদ্ধ বিশ্ববাসী।
তাদের লম্বা সময়ের এ বৈঠকে শুধু যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে তা নয় শুরুর দিকে দুই-প্রেসিডেন্টের হাস্যরস ও পরস্পরের প্রতি বিনয়ীভাবও লক্ষ্য করা যায়। তবে যখনই ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির কথা বলেন, তাও আবার ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত ছাড়াই, তখনই কিছুটা কঠিন ভাষায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
তার যুক্তি, রাশিয়া ২৫ বারের বেশি তাদের চুক্তিভঙ্গ করেছে, তাই তাদের কথায় কোনোভাবেই বিশ্বাস করা যায় না। তাই একমাত্র উপায় হলো ইউক্রেনে মার্কিন সেনা ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের মাধ্যমে তাদের ভূ-খণ্ডের নিরাপত্তা দেয়া।
তবে জেলেনস্কি বিনয়ের সুরে কথা বললেও ট্রাম্প উত্তর দেন খুব কর্কশভাবে। আর ট্রাম্পের আচরণে বিশ্বজুড়ে তাকে নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। এমনকি খোদ মার্কিন বিশ্লেষকেরাও কটাক্ষ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের।
ইউরোপ ও ন্যাটোর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জন টাউনসেন্ড বলেন, ‘ওভাল অফিসে যা ঘটেছে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। ট্রাম্প যে আচরণ করেছে তা অনেকটা মাফিয়ার মতো। খুব অপমানজনক আচরণ করেছেন ট্রাম্প। বিশ্ববাসী দেখলো যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের আসল চেহারা। মার্কিনিদের লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি।’
তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেখা যায়, ট্রাম্পের কাছ থেকে তিক্ত ব্যবহার পাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখে কথা বলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। যদিও ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিবাদী ভাষায় কথা বলায় অনুতপ্ত নন তিনি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি অনুতপ্ত নই। তবে যা হয়েছে সেটি নিঃসন্দেহে খারাপ কিছুই হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন নাগরিকদের প্রতি পূর্ণ সম্মান রয়েছে।’
দুই দেশের প্রেসিডেন্টের কথোপকথনের এক পর্যায়ে ট্রাম্প বারবারই জেলেনস্কিকে 'অকৃতজ্ঞ' বলে সম্বোধন করছিলেন। দেখা যায়, ইউক্রেনকে সহায়তা অব্যাহত রাখায় যুদ্ধ শুরুর পর এ পর্যন্ত ৩৩ বার যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলেনস্কি।