শুল্কযুদ্ধ এড়াতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সন্তুষ্টি অর্জন চেষ্টায় নরেন্দ্র মোদি

বিদেশে এখন
0

পণ্য আমদানিতে শুল্ক হার কমানো কিংবা অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ওপর নির্যাতনের প্রশ্নে নীরবতা। নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে বেশ কিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে নমনীয়তার বার্তা দিয়েছে ভারত। বিশ্লেষকদের ধারণা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সন্তুষ্টি অর্জন চেষ্টার মাধ্যমে যেকোনো মূল্যে শুল্কযুদ্ধ এড়াতে চাচ্ছেন ভারতের সরকার প্রধান।

নয়া সাম্রাজ্যবাদ নীতির সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের মানসিকতা নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র শাসন করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতোমধ্যে চীনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে শুল্ক যুদ্ধ। তালিকায় রয়েছে কানাডা ও মেক্সিকোসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ।

প্রতিপক্ষের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার ক্ষেত্রে যখন কোনো চেষ্টাই বাদ রাখছেন না ট্রাম্প। ঠিক সে মুহূর্তে কৌশলী অবস্থান ভারতের। চলতি সপ্তাহে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ভারতের সরকার প্রধান। লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কারোপ এড়ানো।

লক্ষ্য বাস্তবায়নে সম্প্রতি ভারতের বাজেটে দেখা গেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। কমানো হয়েছে আমদানি পণ্যে শুল্কের হার। তালিকায় রয়েছে উচ্চ সিসির মোটরবাইক, স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড ইনস্টলেশন, সার ও মাছের খাদ্য সহ বেশ কিছু পণ্য। বিশ্লেষকদের ধারণা, শুল্ক অপব্যবহারকারী রাষ্ট্রের তকমা সরানোর পাশাপাশি ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতেই বাজেটে এমন কাটছাঁট করেছে মোদি সরকার।

কৌশলগত সম্পর্ক বিশ্লেষক সুশান্ত সারিন বলেন, ‘ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতে কিংবা আমাদের অর্থনীতিকে বিকশিত করার জন্য, কারণ যেটাই হোক না কেনো আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এর মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।’

অবৈধ অভিবাসীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রিপাবলিকান সরকার। অভিবাসীদের ফেরতে অসম্মতি জানানোয় শুল্ক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় কলাম্বিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। তাই এ বিষয়েও ব্যাকফুটে খেলার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি।

সম্প্রতি ১০৪ অবৈধ অভিবাসীকে টেক্সাস থেকে সামরিক বিমানে করে ফেরত পাঠানো হয় পাঞ্জাবে। হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পড়ানো সত্ত্বেও শুল্কারোপ এড়াতে নমনীয় অবস্থানে বিজেপি সরকার।

সিএসআইএসের সিনিয়র ফেলো ক্যাথরিন বি হাড্ডা বলেন, ‘ট্রাম্পের সমর্থকরা অভিবাসী বিরোধী। মোদির সমর্থকরা ভারতীয় অভিবাসীদের সঙ্গে ভালো আচরণ চায়। তবে কোনো পক্ষই সংঘাতে লিপ্ত হতে চাইবে না। তাই অভিবাসীদের ফেরতের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে সম্পর্কের ভিত্তি নষ্ট করতে চায়নি ভারত।’

গেল বছর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩ হাজার কোটি ডলার। তবে সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে ওয়াশিংটনের। বিশ্লেষকদের ধারণা, নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘাটতি কমাতে ট্রাম্পকে অর্থনৈতিক অংশীদ্বারিত্বের প্রস্তাব দিতে পারেন মোদি।

এক্ষেত্রে চাইতে পারেন ওয়াশিংটনে শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানির সুবিধা। অর্থাৎ ভারতীয় পণ্যে শুল্ক এড়াতে যেকোনো পন্থা অবলম্বন করতে পারেন বিজেপি নেতা, বিষয়টি স্বচ্ছ পানির মতোই পরিষ্কার।

এএইচ