এছাড়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসায় ভাসছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) হামাসের পক্ষ থেকে ৩ ইসরাইলি জিম্মির নাম প্রকাশের পর এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন জিম্মিদের পরিবারগুলো। এরা হলেন ৫৬ বছর বয়সী বেন আমি, ৫২ বছর বয়সী ইলি শারাবি ও ৩৪ বছর বয়সী অর লেভি।
বিপরীত চিত্র দেখা গেছে ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবের হস্টেজ স্কয়ারে। ইসরাই-হামাস সংঘাত শুরুর পর যে হস্টেজ স্কয়ারে নিয়মিত বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হতো। শুক্রবার রাতে সেখানে অদ্ভুত নীরবতা। জিম্মিদের পরিচয় সামনে আসার পর স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন বিক্ষোভকারীরা।
ইসরাইলিদের একজন বলেন, ‘এখন কিছুটা স্বস্তি হচ্ছে। পুরোপুরি সুখী হতে পারছি না কারণ এখনও অনেকেই হামাসের হাতে জিম্মি।’
আরেকজন বলেন, ‘আমাদের দেশের জন্য এটা অনেক বড় খবর। এটা আমাদের সবার অর্জন। বাকিদেরও অবিলম্বে মুক্তি দেয়া উচিত।’
তবে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আবারও যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংস্থাটির দাবি নেতানিয়াহু বাহিনীর অপতৎপরতায় গাজার ত্রাণ সরবরাহ ব্যবস্থা স্থবির হয়ে যাচ্ছে।
পাশাপাশি জিম্মি অবস্থায় নিহত ইসরাইলি নাগরিকদের দেহাবশেষ দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয় বলেও ঘোষণা দিয়েছে হামাস। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভবনের ধ্বংসাবশেষ সরানোর জন্য যে সরঞ্জাম প্রয়োজন তা গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী।
একদিকে জিম্মি বিনিময়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছে, ঠিক তার আগ মুহূর্তে তেল আবিবকে নতুন সুখবর দিয়েছে ওয়াশিংটন। শুক্রবার পেন্টাগন জানায়, ইসরাইলকে সাড়ে ৭শ' কোটির ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
বিধ্বংসী বোমা, ফিউজ, গাইডেন্স কীট ছাড়াও এ প্যাকেজের আওতায় তেল আবিবকে অতিরিক্ত ৬৬ কোটি ডলার মূল্যের 'হেলফায়ার' মিসাইলও বিক্রি করবে ওয়াশিংটন।
এদিকে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তদন্ত ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন নবনিযুক্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
৯৬টি দেশ নিন্দা জানালেও ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ওয়াশিংটন সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ স্পিকার মাইক জনসনকে ইসরাইলে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে ইসরাইলের প্রতি মার্কিন নাগরিকদের সমর্থন অটুট আছে। প্রথমেই মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ সচলের বিষয়ে আলোচনা করেছি। ভবিষ্যতে যা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে।’
নেতানিয়াহু আরো দাবি করেন, মধ্যপ্রাচ্যের সীমান্ত এলাকার চারদিকে ইসরাইলের শত্রুরা ঘাঁটি স্থাপন করেছে। ওয়াশিংটন থেকে সরঞ্জাম নিয়ে সেই অক্ষশক্তিকে প্রতিহত করবে তেল আবিব। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন আলোচনার পর গাজায় যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, তা কতদিন অক্ষুণ্ণ থাকবে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।