পৃথিবীর উত্তর মেরুর হিমশীতল আর্কটিক মহাসাগর অঞ্চলের দেশগুলো দিন দিন হয়ে ওঠছে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার স্পটলাইট। বরফ ঢাকা অঞ্চলে রাশিয়া এবং চীনের সামরিক তৎপরতার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখলের ইচ্ছায় নতুন করে ছড়াচ্ছে উত্তাপ। এ অবস্থায় নিরাপত্তা জোরদারে ২শ' কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করছে ডেনমার্ক। এমনকি তাদের সঙ্গে মিলে সেনা মোতায়েন করতে মরিয়া ফ্রান্সও।
বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলটি আধুনিক যুদ্ধের মূল চাবিকাঠি হয়ে ওঠার শঙ্কা মোকাবিলায় ওঠে পড়ে লেগেছে আর্কটিক মহাসাগর লাগোয়া দেশগুলো। এরজন্য যে কোনো লড়াই মোকাবিলায় উন্নত প্রযুক্তির উপর মনোনিবেশে জোড় দেয়া হচ্ছে।
তীব্র ঠান্ডা, কুয়াশা, বরফের মধ্যে চলাচল করতে না পাড়ায়, কিভাবে বরফ জমাট অবস্থায়ও সফলভাবে ড্রোন চালানো যায়, সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মাঠে নেমেছে আর্কটিক অঞ্চলের দেশগুলো। রুশ সীমান্ত থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে একটি কর্দমাক্ত মাঠে ড্রোন নিয়ে ন্যাটোর কানাডিয়ান সেনাদের পরীক্ষামূলক এ মহড়া তারই অংশ।
ড্রোনের ডানায় বরফ জমলে তা, তাৎক্ষণিকভাবে গ্যাসে রূপান্তর করে বা অন্যকোনো উপায় কিভাবে চলাচল স্বাভাবিক রাখা যায় তা নিয়ে চলছে গবেষণা। এমনকি কার্বন ফাইবার কম্পোজিট জাল যুক্ত করে পর্যাপ্ত তাপ সৃষ্টির মাধ্যমে বরফ গলে ড্রোনের গতি ঠিক রাখা সম্ভব কি-না তা নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ড্রোন বিজ্ঞানী জোয়াচিম ওয়ালিশ বলেন, ‘ড্রোনের উপর বরফ জমলে কর্মক্ষমতা কমে যায়। আর কর্মক্ষমতার অবনতি খুব তীব্র হলে বিধ্বস্তও হতে পারে। তাই আমরা আমাদের সিস্টেমের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি; যাতে বরফের মধ্যেও ড্রোন উড়তে পারে।’
ইতোমধ্যে বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলে চলাচলে উপযোগী ড্রোন কিনতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের বাজেট পরিকল্পনাও করছে আর্কটিক অঞ্চলের দেশগুলো। সম্প্রতি বরফ থেকে সুরক্ষার ড্রোনের জন্য ৫০ লাখ ডলারের চুক্তি সই করেছে বোয়িং এবং লকহিড মার্টিন। সেই সঙ্গে নরওয়ের সশস্ত্র বাহিনী এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্প কোম্পানি টেক্সট্রন সিস্টেমস এবং নর্থরপ গ্রুম্যান আইস-বিরোধী ড্রোন চুক্তি করেছে।