ডুমস ডে ক্লকের কাঁটা আরো এগোলো, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে মানব সভ্যতা?

বিদেশে এখন
0

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে মানব সভ্যতা। সেই পূর্বাভাস দিচ্ছে ডুমস ডের ঘড়ির কাঁটা। ৩ বছরে এই প্রথম ডুমস ডে ক্লকের কাঁটা আরো এক সেকেন্ড এগিয়ে এনেছেন 'বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সাইনটিস্টস' দলের বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ, বিখ্যাত ডুমস ডে ক্লকে রাত বারোটা বাজতে বাকি আছে আর মাত্র ৮৯ সেকেন্ড। এর আক্ষরিক অর্থ বিগত যে কোনো বছরের তুলনায় ২০২৫ সালে আরো নিকটে এসেছে মানব সভ্যতার চূড়ান্ত বিপর্যয়।

মায়ান সভ্যতার ক্যালেন্ডার থেকে বুলগেরিয়ার বাবা ভাঙ্গা- পৃথিবীর শেষদিন নিয়ে ভবিষ্যৎবাণীর কোনো কমতি নেই। যদিও এত কিছুর ভিড়ে প্রাসঙ্গিকতার বিচারে পৃথিবীর শেষ দিনের প্রতীক হিসেবে ১৯৪৭ সাল থেকে জনপ্রিয় ডুমস ডে ঘড়ি।

যদিও ডুমস ডে ক্লকের কাঁটা সবসময়েই স্থির থাকে। নির্দিষ্ট সময় পরপর সেই কাঁটা কতখানি ঘুরবে তা নিয়ন্ত্রণের ভার পরমাণু বিজ্ঞানীদের দল বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সাইনটিস্টের।

১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর ৪ মাস পর একদল পরমাণু বিজ্ঞানীর তৎপরতায় সামনে আসে 'বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস'-এর প্রকাশনা। ১৯৪৭ সালে তাদের বুলেটিন প্রকাশ পায় ম্যাগাজিনে। প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদে স্থান পায় 'ডুমস ডে ক্লক'। পারমাণবিক প্রযুক্তির ভয়াবহতা সম্বন্ধে বিশ্ববাসীকে সচেতন করাই ছিল এর প্রধান লক্ষ্য।

'ডুমসডে ঘড়ি' যখন প্রথম বিশ্বের সামনে আসে তখন ঘড়িতে সময় দেখানো হয় ১১ টা বেজে ৫৩ মিনিট। এর দু'বছর পর প্রথমবারের মতো পরমাণু পরীক্ষা শুরু করে সোভিয়েত। তাই, ১৯৪৯ সালে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে যায় আরো ৪ মিনিট। আর, ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার কারণে সময় এগিয়ে আসে আরো এক মিনিট।

মানবসৃষ্ট বিপর্যয়, যুদ্ধ-বিগ্রহ, পারমাণবিক বোমা, অস্ত্রশস্ত্র ইত্যাদি বিবেচনা করে আগানো বা পেছানো হয় এই কাঁটা। আক্ষরিক অর্থে ডুমস ডে ক্লকে বারোটা বাজা মানে মানবসভ্যতার ধ্বংস প্রায় অনিবার্য। ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ডুমস ডে ক্লকে বারোটা বাজতে বাকি ছিল ১০০ সেকেন্ড। ২০২৩-২৪ এ সেই ব্যবধান কমে আসে ৯০ সেকেন্ডে। আর নতুন বছর ২০২৫ এ এসে আরো ১ সেকেন্ড কমেছে ব্যবধান।

'বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সাইনটিস্টস'-এর দাবি এই ঘড়িতে যখন ঠিক রাত ১২ টা বাজবে তখন ধরে নিতে হবে পৃথিবীর ভয়ানক বিপর্যয় আসন্ন, ধ্বংস হতে পারে পৃথিবী তথা গোটা মানবজাতি।

২০২৫ এ এসে ডুমস ডে ক্লকে রাত বারোটা বাজতে বাকি আর মাত্র ৮৯ সেকেন্ড। অথচ, ১৯৯১ সালে ডুমস ডে ঘড়িতে রাত বারোটা বাজতে বাকি ছিল ১৭ মিনিট। ৩৪ বছরে সে ব্যবধান কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে দেড় মিনিটে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যতটা দ্রুততার সাথে এগোচ্ছে ডুমস ডে ক্লকের কাঁটা, তাতে করে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদাসীন থাকার আর খুব বেশি সুযোগ নেই।

ইএ