প্রবাসী কর্মীদের শ্রমে-ঘামে সচল দেশের অর্থনীতির চাকা। তবে, শুধু প্রবাসে কর্মরতরাই নন, প্রতিবছর মৃত প্রবাসীদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ও বকেয়া বেতন মিলে দেশের অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। গেল এক বছরে শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসী কর্মীর বকেয়া বেতন ও মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ আদায় হয়েছে ৩৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানায়, আমিরাতে প্রতিবছর বেশ কিছু প্রবাসী কর্মী সড়ক দুর্ঘটনায় কিংবা কর্মস্থলে কারো দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নিহত হন। তাদের পরিবারকে আইনি সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে সহযোগিতা প্রদান করে বাংলাদেশ মিশন। এসব ক্ষেত্রে 'ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ' বোর্ডের মধ্যস্ততায় মৃত প্রবাসীর পরিবারের 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' চলে যায় বাংলাদেশ মিশনের আওতায়।
পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পাওয়ার পর 'শ্রম কল্যাণ উইং' আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে মামলার আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ক্ষতিপূরণ আদায় হলে সেই অর্থ হস্তান্তর করা হয় মৃত প্রবাসী কর্মীর পরিবারের কাছে।
আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসের অধীনে বর্তমানে এ ধরনের ৬৮টি মামলা চলমান রয়েছে। ৫টি মামলা নিষ্পত্তির পর সেখান থেকে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩২ হাজার ১৮৫ টাকা। এছাড়া, দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অধীনে চলতি বছর এ ধরনের ৩২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তি হওয়া মামলা থেকে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ আদায় হয়েছে ২২ কেটি ৩৫ লাখ ১৫ হাজার ৩০২ টাকা। আর, চলমান রয়েছে আরও ৩১টি মামলা।
এছাড়া, গেল বছর ১৫৫ মৃত প্রবাসী কর্মীর বকেয়া ১০ কোটি ২৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা আদায় করেছে দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট। আর ৬২ জন মৃত প্রবাসী কর্মীর ১ কোটি ২১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে সমর্থ হয় আবুধাবি দূতাবাস। পাশাপাশি দেশে প্রত্যাবর্তনকারী ২৫ প্রবাসীর ১ কোটি ৮ লাখ টাকা কোম্পানি ও নিয়োগকর্তা থেকে আদায় করে দেশে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ মিশন জানায়, কোনো প্রবাসী কর্মীর মরদেহ দেশে প্রেরণের ছাড়পত্র প্রদানের সময় ঐ কর্মীর পাওনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। ক্ষেত্র বিশেষে এই অর্থ দূতাবাসের মাধ্যমে ঐ কর্মীর বৈধ উত্তরাধিকারীর কাছে পাঠানোর বিধান আছে। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ও আদায়ের সময় নির্ভর করে স্থানীয় আদালতের রায়ের উপর।