বিদেশে এখন
0

তালিবানের মতো শাসন পরিচালনা করা হবে না সিরিয়ায়

আফগানিস্তান ও সিরিয়ার সংস্কৃতি ভিন্ন। তাই তালিবানের মতো শাসন পরিচালনা করা হবে না সিরিয়ায়। এমনকি নিশ্চিত করা হবে নারীদের শিক্ষা ও মানবাধিকার। স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের পতনের পর প্রথম সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন আবু মোহাম্মাদ আল জুলানি। সিরিয়া ও এইচটিএসের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতেও পশ্চিমাদের কাছে আহ্বান জানান গোষ্ঠীটির প্রধান। এদিকে আগ্রাসনের মধ্যে সিরিয়ার কুনেইত্রা প্রদেশের ৯৫ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে ইসরাইল।

মাত্র ১২ দিনে ৫৩ বছরের আসাদ সাম্রাজ্যকে ছুড়ে ফেলায় বিশ্বজুড়ে আলোচনায় হায়াত তাহরির আল শাম ও এর নেতা আবু মোহাম্মাদ আল জেলোনি। পরিবর্তিত সিরিয়া কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সিরিয়া দখলের পর প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকার দিলেন গোষ্ঠীটির প্রধান। দিয়েছেন নতুন সিরিয়ার কেমন হবে, তার আভাস।

বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জেলোনি দাবি করেন, বিশ্বের জন্য সিরিয়া এখন আর হুমকি নয়। এইচটিএস সাধারণ মানুষ কিংবা বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়নি। তাই সিরিয়া ও এইচটিএসের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার জন্য পশ্চিমাদের কাছে আহ্বান জানান তিনি।

এইচটিএসের প্রধান আবু মোহাম্মাদ আল জুলানি বলেন, ‘আমরা এমন কোনো অপরাধ করিনি যার কারণে আমাদের সন্ত্রাসী বলা হবে। গেল ১৪ বছরে আমরা সিরিয়ার বেসামরিক নাগরিক কিংবা স্থাপনায় হামলা চালাইনি। এখন যা হয়েছে, তার পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার জরুরি। আমরা আসাদের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। শাসক ও শোষিতকে একই পাল্লায় মাপা উচিত নয়।’

আফগানিস্তানের মতো সিরিয়ায় খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা হবে কীনা, এ প্রশ্নের জবাবে জুলানি জানান দুই দেশের সংস্কৃতি ভিন্ন। সিরিয়ার ইতিহাস ও সংস্কৃতির ভিত্তিতেই নতুন সরকার শাসন কাজ চালাবে। নারীদের শিক্ষার পাশাপাশি নিশ্চিত করা হবে মানবাধিকার।

আবু মোহাম্মাদ আল জুলানি বলেন, ‘সিরিয়া ও তালিবানের মধ্যে অনেক ভিন্নতা রয়েছে। দেশ পরিচালনার পদ্ধতিও ভিন্ন। আফগানিস্তানে উপজাতীয় সমাজ রয়েছে। সিরিয়া পুরোপুরি আলাদা। জনগণের দর্শনও ভিন্ন। সিরিয়ার সরকার ও শাসনব্যবস্থা দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ভিত্তিতেই পরিচালনা করা হবে।’

অধিকৃত গোলান মালভূমিতে অবৈধভাবে বসতি নির্মাণের পাশাপাশি সিরিয়ায় আগ্রাসন চালাচ্ছে আইডিএফ। রুশ গণমাধ্যম স্পুটনিকের তথ্য বলছে, কুনেইত্রা প্রদেশের ৯৫ শতাংশ এলাকাই এখন ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দখলে। এমন পরিস্থিতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে আঙ্কারায় সাক্ষাৎ করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। সিরিয়ার স্থিতিশীলতার প্রশ্নে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে দুই দেশের সরকার প্রধান।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, ‘সিরিয়ায় নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। সিরিয়ার স্থিতিশীলতার অর্থ গোটা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা। তাই সিরিয়ার দুই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হওয়ায় তুরস্ক ও লেবানন একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছে।’

এদিকে আসাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে দামেস্ক ও আলেপ্পা বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট কার্যক্রম। উচ্ছ্বসিত সিরিয়ানরা দেশের পতাকা হাতে ঐতিহাসিক মুহূর্তটি উদযাপন করেছেন।

ইএ