বিদেশে এখন
0

গাজায় গণহত্যা আরো বাড়িয়েছে ইসরাইল

সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর গাজায় গণহত্যা আরো বাড়িয়েছে ইসরাইল। একদিনেই উপত্যকায় ৭১ জন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশার বাণী দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত ইসরাইল, এখন শুধু হামাসের জবাবের অপেক্ষা। কিন্তু গাজায় ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে সরকার উদাসীন, এমন দাবি করে তেল আবিবে মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ইসরাইলের সাধারণ মানুষ।

এক স্বৈরশাসকের পতনের পর নিজের গদি শক্ত করতে যেন উঠে পড়ে লেগেছেন আরেক স্বৈরশাসক হিসেবে পরিচিত ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

বৃহস্পতিবার উপত্যকায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর হত্যাযজ্ঞে প্রাণ গেছে অর্ধ শতাধিক বেসামরিক ফিলিস্তিনির। এর মধ্যে উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে অষ্টম ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবির নুসেইরাত ক্যাম্পে ইসরাইলি হামলায় একদিনেই প্রাণ গেছে ৩৩ জনের।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন নতুন কিছু না হলেও এই পুরো সময়টায় উপত্যকার ৯শ'র বেশি পরিবার পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে।

উপত্যকার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সদস্যরা লুকিয়ে আছে দাবি করে এখানে অনবরত হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। কোনোভাবেই যখন গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন কমার কোন লক্ষণ নেই, তখন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছেন।

উত্তপ্ত এই পরিস্থিতিতে আবারও মধ্যপ্রাচ্য সফরে এসেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সিরিয়ার পরিস্থিতি আর গাজায় গণহত্যা ইস্যুতে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

এদিকে, বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনার জন্য তেল আবিব গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। বলেন, যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইল আর হামাসের মধ্যে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে। এসময় হামাস ৩০ বন্দিকে মুক্ত করবে। ইসরাইলও কারাগারে থাকা কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে মুক্ত করবে। পাশাপাশি গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর রাস্তা খুলে দেবে আইডিএফ।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জ্যাক সুলিভান বলেন, ‘ইসরাইল সরকার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি আছে। কিন্তু বন্দিরা মুক্ত না হলে আমরা নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। আশা করি রাজনৈতিক সমঝোতার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে। হামাসও সম্মতি জানাবে। মধ্যস্থতাকারীরও আবারও চেষ্টা শুরু করেছে। আশা করি কায়রোতে সবাইকে এক ছাদের নিচে নিয়ে আসবো।’

জ্যাক সুলিভান দিয়েছেন আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানান, যুদ্ধবিরতির সময় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর গাজায় অবস্থান নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই হামাসের। যদিও হামাসের পক্ষ থেকে এখনও আসেনি কোনো বিবৃতি।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে জেরুজালেমে জ্যাক সুলিভান আর নেতানিয়াহুর বৈঠকের পর তেল আবিবে মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, সরকার বন্দিদের নিয়ে ভাবছে না। এমনকি গাজার সাধারণ মানুষের মানবেতর পরিস্থিতি নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন তারা।

চলমান এই আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে।

ইএ