করোনা মহামারির পর থেকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে একেবারেই বিনষ্ট হয়েছে শান্তি। মহামারি ক্ষত না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মূল্যস্ফীতি চরমে, এরপর মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো মিয়ানমারে জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাত, সবশেষ গাজা আর লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসন। এরমধ্যে আফ্রিকার মালি থেকে সোমালিয়ায় চরম সংঘাত তো লেগে আছে বছরজুড়েই। বাড়ছে বিশ্ব অর্থনীতি আর খাদ্য নিরাপত্তায় অনিশ্চয়তা।
যুদ্ধ-সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত কনফ্লিক্ট ইনটেনসিফাই ইনডেক্স – সিআইআই বলছে, সংঘাতপূর্ণ এলাকার পরিমাণ ৬৫ শতাংশ বেড়েছে গেলো ৩ বছরে। যেই ভূখণ্ড ভারতের মোট আয়তনের দ্বিগুণ। ইউক্রেন, মিয়ানমার, মধ্যপ্রাচ্য আর আফ্রিকার সাহেলে ২০২১ সাল থেকে ছড়িয়ে পড়েছে সংঘাত সহিংসতা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাত চলতে পারে পুরো এক দশক।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে গমের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত, মধ্যপ্রাচ্যে আগ্রাসনে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হওয়ায় বিশ্ববাজারে বেড়েছে খাদ্য অনিশ্চয়তা। মধ্যপ্রাচ্যে গম রপ্তানি পড়ে গেছে হুমকিতে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরে কিংবা এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সংঘাতে পৃথিবীর ৬১ লাখ স্কয়ার কিলোমিটারের বেশি এলাকাই সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আছে। বাস্তুচ্যুত হয়ে অভিবাসী হওয়ার সংখ্যাও অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি।
প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালে বিশ্বের মোট ভূখণ্ডের ২ দশমিক ৮ শতাংশ এলাকা সংঘাতপূর্ণ ছিল, এখন তা পৌঁছেছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশে। বিরোধের কারণে মানুষ মৃত্যুহার বেড়েছে ২৯ শতাংশ। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অন্তত ২৭ টি দেশ অনেক বেশি যুদ্ধ সংঘাতের ঝুঁকিতে রয়েছে। মালি থেকে সোমালিয়া পর্যন্ত আফ্রিকার সাহেল আর হর্ন অব আফ্রিকায় তিন বছরে সংঘাত দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সুদান, বুরকিনা ফাসো আর ইথিওপিয়ায় চরম আকারে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বেসরকারি মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা বলছে, যুদ্ধ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে ইউক্রেন, গাজ, সুদান, লেবাননসহ বিশ্বের ৪৭ কোটি শিশুর ওপর।