মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অনুমতির দুই দিনের মাথায় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালালো ইউক্রেন। দেশটির সামরিক বাহিনীর তথ্য বলছে, হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে আতাকামাস মিসাইল। রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের কারাচেভ শহরের একটি সামরিক স্থাপনা গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে ১৩০ কিলোমিটার পূর্বে শহরটির অবস্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতির পর হামলা চালানোয় ক্ষুব্ধ রাশিয়া নিজেদের নিউক্লিয়ার ডকট্রিনে এনেছে পরিবর্তন। মঙ্গলবার যুদ্ধের ১ হাজার তম দিনে পরমাণু নীতির নতুন ডিক্রি জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পরিবর্তিত ডকট্রিনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের সহায়তায় কোনো দেশ রাশিয়ায় হামলা চালালে তা যৌথ হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে। অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ব্যালিস্টিক মিসাইল, হাইপারসনিক মিসাইল, ড্রোন কিংবা মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম। এমনকি জ্বালানি স্থাপনায় হামলাও যৌথ হামলার আওতায় পড়বে। শত্রুপক্ষের এমন পদক্ষেপের প্রতিউত্তর হিসেবে হামলাকারী দেশের ওপর পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করবে মস্কো। প্রতিবেশী মিত্র বেলারুশে হামলা হলে একই নীতি অনুসরণ করবে পুতিন প্রশাসন।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, পরমাণু অস্ত্রকে প্রতিরক্ষার মাধ্যম হিসেবে দেখে রাশিয়া। বাধ্য না হলে এমন ধ্বংসাত্মক অস্ত্র প্রয়োগ করবে না মস্কো।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের সামরিকবাহিনীকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য এটি প্রয়োজন ছিল। পরমাণু অস্ত্রকে প্রতিরক্ষার মাধ্যম হিসেবে দেখে রাশিয়া। খুবই গুরুতর পরিস্থিতি না হলে এটি ব্যবহার করা হবে না। রাশিয়া ও বেলারুশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নতুন ডকট্রিনটি গুরুত্বপূর্ণ।’
কুরস্কে রাশিয়ার পক্ষে ১১ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা লড়লেও শিগগিরি এই সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ১ লাখে। সংঘাতের সহস্রতম দিন উপলক্ষে পার্লামেন্ট বক্তৃতায় এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। রাশিয়াকে আটকাতে দেশটির জ্বালানি খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর করার আহ্বান জানান জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘১১ হাজার উত্তর কোরীয় সেনাকে ইউক্রেনের সীমান্তে নিয়ে এসেছেন পুতিন। এই বহর পৌঁছাতে পারে ১ লাখে। অনেক ইউরোপীয় দেশ ইউক্রেনকে সহায়তাকে এককালীন ভেবে নিচ্ছেন। তবে আপনার বুঝতে পারছেন না, পুতিন নিজ থেকে থামবে না। যুদ্ধ জয়ের জন্য তিনি মনোনিবেশ করেছেন।’
রাশিয়াকে প্রতিহতে ইউক্রেনের আরো অর্থ ও সহায়তা প্রয়োজন। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক বৈঠকে এমন মন্তব্য করেছেন ন্যাটো মহাসচিব। জানান, প্রতিরক্ষা খাতকে শক্তিশালী করতে একযোগে কাজ করবে ন্যাটো ও ইইউ।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট বলেন, ‘ইউক্রেনকে জয়ী দেখতে করণীয় ঠিক করতে বসেছি। এর অর্থ আরো বেশি সহায়তা, আরো বেশি অর্থ তাদের সরবরাহ করতে হবে। এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়া সরাসরি যুদ্ধে যোগ দিয়েছে। চীন ও ইরানও রাশিয়ার পক্ষে সহায়তা দিচ্ছে।’
এদিকে কয়েকদিনের মধ্যে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এমন ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।