বিদেশে এখন
0

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা পাঠানোয় পিয়ংইয়ংয়ের সমালোচনা

এপেক শীর্ষ সম্মেলন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সেনা ও অস্ত্র সহায়তা পাঠানোয় পিয়ংইয়ংয়ের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) পেরুর লিমায় এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন বা এপেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনের বৈঠকে তারা আশঙ্কা করেন, উত্তর কোরিয়া-রাশিয়ার জোট বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। একইদিনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে আলাদা বৈঠকে সিউল-বেইজিং কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারের আহ্বান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কোনো বৈশ্বিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২১ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের অংশগ্রহণে পেরুর লিমায় চলছে ৩১তম এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন বা এপেক শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। ১৫ থেকে ১৬ নভেম্বর- দুইদিনব্যাপী এপেক ইকোনমিক লিডারস' মিটিং এ যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যোগ দিয়েছে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশের অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তির দেশ, যাদের দখলে বিশ্বের মোট জিডিপির দুই তৃতীয়াংশ।

ক্ষমতার পালাবদলে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনীতি, ওয়াশিংটন-বেইজিং বৈরিতা এবং এক্সিস অব ইভিল খ্যাত উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া-চীন-ইরানকে নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এপেকের সাইড লাইনে। শুক্রবার ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। একই দিনে দক্ষিণ কোরিয়া আর থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে চীনের সাথে সম্পর্কের অবনতির যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে সেই রেশ ধরেই এশিয়ার দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বলেন, বিশ্ব যে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পালাবদলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে কূটনৈতিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা কঠিন হবে। পাশাপাশি, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের একযোগে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন।

তিনি বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক পালাবদলের সাক্ষী হচ্ছে বিশ্ববাসী। সত্যিই বিশ্বাস করি, আমাদের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে, সেটাই ভবিষ্যতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও ভারসাম্য রক্ষার ভিত হিসেবে কাজ করবে। আগামী দিনগুলোতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে আপনারা কী মনে করেন- তা জানতে চাই।'

একইদিনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলের সাথে সাক্ষাৎকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দাবি করেন, চলমান সংঘাত ও অস্থিরতার মধ্যেও সিউল-বেইজিং সম্পর্কে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি।

শি জিনপিং বলেন, 'গেল দুই বছরে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিসরে নানা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু চীন ও রিপাবলিক অব কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। আগামীতেও পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, চীন ও উত্তর কোরিয়া তাদের উদ্দেশ্য থেকে সরে আসবে না, বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক ধরে রাখবে।'

এদিকে, পরের এপেক সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্ব গ্রহণের পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল অভিযোগ করেছেন, ত্রুটিপূর্ণ সরবরাহ ব্যবস্থা ও সুরক্ষানীতির কারণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করছে। ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও উন্নত করার সুযোগ আছে বলে মন্তব্য করেছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। আর যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলে আমেরিকা-জাপান- দক্ষিণ কোরিয়ার ত্রিপক্ষীয় জোটের গুরুত্ব অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে মনে করেন জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু।

ইএ