ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে রাশিয়ায় ১০ হাজারের বেশি সৈন্য পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে এমন দাবির পর, দক্ষিণ কোরিয়াও ইউক্রেনের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। কৌশলগত বিষয় নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। এর অংশ হিসেবে কিয়েভে একটি সামরিক পর্যবেক্ষক দলও পাঠানোর কথা ভাবছে সিউল।
এ অবস্থায় নতুন করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ উত্তেজনার পারদ যেমন বাড়ছে, তেমনি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার দ্বন্দ্বও পৌঁছেছে চরমে। এমনকি রাশিয়াকে সেনা দিয়ে উত্তর কোরিয়ার সহায়তার বিষয়টি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য হুমকি হিসেবেও দেখছেন বিশ্লেষকরা।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ডু জিন-হো বলেন, ‘এখন কোরীয় উপদ্বীপে যদি কোনও জরুরি অবস্থা তৈরি হয় তাহলে উত্তর কোরিয়াকে সহযোগিতা অংশ হিসেবে রাশিয়াও তাদের সামরিক বাহিনী দিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য এক ধরনের হুমকি। কারণ কূটনৈতিক বিনিময় ও সহযোগিতার মধ্য দিয়ে মস্কো ও পিয়ংইয়ং এর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরালো হচ্ছে।’
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের হটাতে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের কাজে লাগানো হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। যদি তাই হয়, তাহলে যুদ্ধকৌশল ও আধুনিক সমরাস্ত্র পরিচালনায় পিয়ংইয়ং এর সেনা দক্ষ্য হয়ে উঠবে বলেও মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা। তবে দেশীয় আইনের বাধ্যবাধকতায় ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে মনে করছেন এই বিশ্লেষক।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ডু জিন-হো বলেন, ‘প্রতিক্রিয়া হিসেবে যদি দক্ষিণ কোরিয়া ইউক্রেনে প্রাণঘাতী অস্ত্র পাঠানোর কথা ভাবে, তাহলে প্রথম বাধা হবে তাদের দেশীয় আইন। আর ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর জন্য আইন সংশোধন করাও কঠিন হবে। কারণ সিউলের আইন অনুযায়ী, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে অস্ত্র রপ্তানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ।’
এদিকে উত্তর কোরীয় কিছু সেনা ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে, প্রশিক্ষণ শেষে উত্তর কোরীয় আরও অনেক সেনা যুদ্ধের সম্মুখ সারিতে চলে আসবেন। যা নিয়ে সজাগ দৃষ্টিতে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউক্রেনের অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররা।
তবে সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার বর্তমান সেনাদের অভিজ্ঞতা না থাকায় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পাশে থেকে যুদ্ধ করে কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ভাষাগত বাধাও তাদের সামরিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা করা হচ্ছে।