বিদেশে এখন
0

গণতান্ত্রিক ও বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সম্মত ব্রিকস

গণতান্ত্রিক ও বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে ব্রিকস। জোটের শেষ দিনের সম্মেলনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর উত্থানই বলে দিচ্ছে বিশ্ব ব্যবস্থার পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর বিশ্বের অন্যতম দাগি আসামির তালিকায় ভ্লাদিমির পুতিন। এবার সেই রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে করমর্দন করে আলোচনার জন্ম দিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। ৪ বছরের তিক্ততা শেষে হাত মেলানোর পাশাপাশি বৈঠক করেছেন চীন ও ভারতের সরকার প্রধান। তাই এবারের ব্রিকস সম্মেলনকে বিরলের পাশাপাশি সফল বার্তা দিতে কার্পণ্য করছেন না বিশ্লেষকরা।

১৬তম সম্মেলনের শেষ দিনে গণতান্ত্রিক ও বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। ভূ-রাজনীতি থেকে শুরু করে ডলারের বিকল্প মুদ্রা ব্যবস্থা চালু, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোনো প্রসঙ্গই বাদ যায়নি এবারের সম্মেলনে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। জানান, সুইফটের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা চালু করবে না ব্রিকস। কারণ রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ম্যাসেজ সিস্টেম ব্যবহার করছে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। ব্রিকসের মূল্যবোধকে ধারণ করতে পারলে জোটের সদস্য যে কোনো দেশ হতে পারবে বলেও আশ্বস্ত করেন ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘ব্রিকস ক্লোজ ফরম্যাটে কাজ করে না। যারা একই মূল্যবোধ ধারণ করে, তাদের জন্য ব্রিকসের দরজা খোলা। আর্থিক খাতে অংশীদারিত্ব জোরদারের জন্য আমরা কাজ চালিয়ে যাবো।’

রুশ প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে উঠে আসে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গও। জানান, সংঘাত নিরসনে যেকোনো প্রস্তাব গ্রহণে প্রস্তুত রাশিয়া। যদিও প্রস্তাবগুলো বাস্তবসম্মত হতে হবে। ইউক্রেনে উত্তর কোরীয় সেনা পাঠানোর বিষয়টির পক্ষে বা বিপক্ষে কথা না বললেও অভিযোগ করেন, ন্যাটোভুক্ত দেশের সেনারা যুদ্ধে ইউক্রেনের পক্ষে সরাসরি লড়াই করছে।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘ন্যাটোভুক্ত দেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়েছে। আমরা জানি, কারা কৃষ্ণসাগরে ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। কোন কোন দেশ কাজ করছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আছে।’

সম্মেলনের শেষ দিনে চীনা প্রেসিডেন্ট জানান, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর উত্থানই বলে দিচ্ছে বিশ্ব ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। ভবিষ্যৎ পৃথিবী বিনির্মাণে জোটের সদস্যদের সঙ্গে একত্রে কাজ করার আশা প্রকাশ করেন শি জিনপিং।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, ‘বিশ্ব পরিবর্তিত হচ্ছে। এর অন্যতম নিদর্শন হলো গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর উত্থান। মানব সভ্যতার ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করতে যাচ্ছে দেশগুলো। সফলতার পথ সহজ না হলেও আমরা একত্রে কাজ করে যাবো।’

রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত এবারের সম্মেলনে যোগ দিয়েছে ৩৬টি দেশের প্রায় ২০ হাজার প্রতিনিধি। ৯ দেশের এই জোটটিতে যোগ দিয়েছে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ আরো ১৩ সদস্য। যদিও এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়নি।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর