ওড়িশার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে সাইক্লোন দানা

0

ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে সাইক্লোন দানা। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলবর্তী অন্তত ৫ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টার দিকে ওড়িশার স্থলভাগে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে ঝড়টি। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সাইক্লোনটি ক্রমাগত দুর্বল হয়ে ওড়িশার উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে দানার প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর সাইক্লোন দানার তাণ্ডব দেখলো ওড়িশাবাসী। বৃহস্পতিবার রাত থেকে দমকা বাতাস আর ভারি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বন্ধ আছে সড়কে যান চলাচল ও বাতিল করা হয়েছে দুইশ'র বেশি দূরপাল্লার ট্রেন। গতকাল সন্ধ্যা থেকে বন্ধ আছে বিমান চলাচলও।

স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে ঝড়টি। যদিও, রাজ্যের উত্তরাঞ্চল থেকে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় ঝড়টির দুর্বল হয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, '৪ লাখের কাছাকাছি বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছি। তাদের জন্য খাদ্য ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় প্রতিনিধিরা দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন করছেন। বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার যে পরিকল্পনা ছিল তা কার্যকর করা হচ্ছে। শুরুতে ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। সেটা ৪ লাখে নেমে এসেছে।'

বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার যে পরিকল্পনা ছিল তা কার্যকর করা হচ্ছে। শুরুতে ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। সেটা ৪ লাখে নেমে এসেছে। ৪ লাখের কাছাকাছি বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছি। তাদের জন্য খাদ্য ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় প্রতিনিধিরা দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন করছেন।

আবহাওয়া দপ্তর আরও জানায়, সকাল ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি ধামরার ১৫ কিলোমিটার উত্তরে ও ভিতারকার্ণিকার ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থান করলেও ক্রমশ শক্তি হারিয়ে পশ্চিমে সরে যাচ্ছে।ভাদ্রাকসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ঝড়ের প্রভাবে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় জারি আছে লাল সতর্কতা।

কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস থাকায় ১৬টি জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের।

এদিকে, সরাসরি আঘাত না হানলেও, ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে কলকাতাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। নবান্ন থেকে সাইক্লোনের সবশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের।

বিদুৎহীন অবস্থায় দিন পার করছেন দীঘার উপকূলবর্তী এলাকার কয়েকশ বাসিন্দা। বিঘ্নিত হচ্ছে বিমান পরিষেবা। তবে ক্ষয়ক্ষতি কম হওয়ার স্বস্তি জানান স্থানীয়রা।

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও হাওড়ার নদী বন্দরগুলির পাশাপাশি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকার কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এছাড়া, ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় নদী বাঁধ এবং ফ্লাড সেন্টারগুলো পরিদর্শন করেছেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলাপ্রশাসক ও সুন্দরবন পুলিশের কর্মকর্তারা।

পর্যটন নগরী বকখালির বেশ কিছু আবাসিক হোটেল উন্মুক্ত করা হয়েছে বন্যা কবলিতদের জন্য। ইতোমধ্যে নামখানা ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে উপড়ে পড়া গাছ সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা।

ইএ