বিদেশে এখন
0

হিজবুল্লাহ'র আরেক শীর্ষ নেতাকে হত্যার দাবি ইসরাইলের

এবার হিজবুল্লাহ'র আরেক শীর্ষ নেতা হাসেম সাফিউদ্দিনকে হত্যার দাবি করছে ইসরাইলি সেনারা। লেবাননের একটি সূত্র বলছে, শুক্রবার থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে, হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলিদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি রকেট ও বিমান হামলা চলছে। চরম মানবিক সংকটে পড়া লেবাননে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ। গাজা ও লেবাননে হামলার জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে বিক্ষোভে নেমেছে হাজারো মানুষ।

প্রয়াত হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর চাচাতো ভাই হাসেম সাফিউদ্দিন। ইসরাইলের দাবি, গেল শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে তাদের হামলায় সাফিউদ্দিন মারা গেছেন। লেবননের নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে পারছে না হিজবুল্লাহ। সাফিউদ্দিনকে নাসরাল্লাহর উত্তরসূরী বিবেচনা করা হচ্ছিল। শিয়া অনুসারী সাফিউদ্দিন ইরানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছিলেন।

হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরাল্লাহর মৃত্যুর পর অনেকটা নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। এবার আরেক শীর্ষ নেতার মৃত্যুর খবরে দিশেহারা সংগঠনটি। এদিকে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল ও রাজধানী বৈরুতে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সেনারা। প্রতিরোধ গড়ে পাল্টা আক্রমণের দাবিও করছে হিজবুল্লাহ। সীমান্ত অঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে চলছে গোলাগুলি।

এমন পরিস্থিতিতে লেবানন ছেড়ে যাচ্ছে অন্য দেশের নাগরিকেরা। দুই শতাধিক চীনা নাগরিককে এরইমধ্যে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। ইসরাইলি হামলায় লেবাননেও ধীরে ধীরে আরেকটি গাজায় পরিণত হচ্ছে। বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের শহরে পোড়া ভবন ও ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠছে ধোঁয়া। ভয়ে আতঙ্কে বাসিন্দারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিন ও লেবাননের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ করছে।’

আরেকজন বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণে আমরা চীনা জাহাজে করে দেশে ফিরে যাচ্ছি। আমাদেরকে সশস্ত্র হেলিকপ্টার দিয়ে এখানে পৌঁছানো হয়েছে।’

এ অবস্থায় চরম মানবিক সংকটের মুখে লেবানন। ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। ইসরাইলি হামলা থেকে বাদ যায়নি আবাসিক ভবন থেকে শুরু করে হাসপাতালও। জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশ থেকে পাঠানো হয়েছে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা ।

লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেন, ‘২০টিরও বেশি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। গাজা উপত্যকার মতো রূপ নিয়েছে লেবানন। স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি ধসে পড়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদেরও টার্গেট করা হয়েছে। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া আপাতত কোনো সমাধান নেই।’

এদিকে, লেবানন ও গাজা উপত্যকায় একযোগে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। ইয়েমেনের রাজধানী সানার রাস্তায় নেমেছে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে দায়ী করে বিক্ষোভ জানায় তারা।

বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘আমরা গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনে ইহুদিদের হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এখানে এসেছি।’

আরেকজন বলেন, ‘হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা রাস্তায় নেমেছি।’

গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরাইলের সঙ্গে হিজবুল্লাহ'র চলমান সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন লেবাননের দুই হাজারের মতো মানুষ। আহত আরও কয়েক হাজার।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর