দুর্ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও নিহতদের মরদেহ বুঝে না পাওয়ায় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে সাও পাওলোর বাতাস। বাড়ছে অপেক্ষা। পরিচিত কেউ আছেন কি-না তা নিশ্চিতে ফ্লাইটে থাকা যাত্রীদের তালিকা চাচ্ছেন অনেকে।
স্বজনদের একজন বলেন, ‘আমার জানা মতে, এমন লোক রয়েছে যার স্ত্রী, সন্তানসহ নিহত হয়েছেন। তবে এখনও যাত্রী তালিকা দেয়া হয়নি। আমারও একজন আত্মীয় আছে।’
মরদেহগুলোর মধ্যে ঘটনাস্থলেই দু'জন পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকিদের দেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ইতোমধ্যেই জেনেটিক উপাদান সরবরাহ করতে স্বজনদের সাও পাওলোতে আনা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের ক্যাপ্টেন মেকন ক্রিস্টো বলেন, ‘নিহতদের মরদেহগুলো সাও পাওলোর কেন্দ্রীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সেখানেই তাদেরর পরিচয় শনাক্তকরণের যাবতীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
এদিকে, শনিবার দিনভর দুর্ঘটনাস্থলে অভিযান চললেও, এখনও উদঘাটন হয়নি ভয়াবহ এ বিমান দুর্ঘটনার প্রকৃত রহস্য। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তে কাজ করছে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি। অন্যদিকে বিমান বাহিনীর আওতায় থাকা আরেক তদন্ত কমিটি বলছে, বিমানের ককপিট-ভয়েস এবং ফ্লাইট-ডেটা রেকর্ডার উদ্ধার করা হয়েছে। তবে রেকর্ডার দুটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত, যার কারণে এসবের তথ্য বিশ্লেষণ করা এখনও সম্ভব হয়নি। খোঁজা হচ্ছে ব্ল্যাক বক্স।
এরমধ্যেই প্রাণহানির তালিকায় পরিবর্তন এনে ৬১ আরোহীর স্থলে ৬২ আরোহীর নিহতের খবর নিশ্চিত করেছে ভোপাস এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। বলা হচ্ছে, স্থানীয় শুক্রবার দুপুরে পারানা রাজ্য থেকে সাও পাওলো রাজ্যে যাওয়ার সময়, উড়োজাহাজটিতে ৫৭ জন যাত্রী, চারজন ক্রু এবং আরও একজন অনিবন্ধিত আরোহী ছিলেন।
এদিকে বিমান দুর্ঘটনায় সব আরোহীর প্রাণ গেলেও, ভিনহেডো শহরের যে বাড়ির উঠোনে বিধ্বস্ত হয়েছে সেই বাড়ির সব সদস্য অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘বিমানটি আমার বাড়িতে বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে আমরা ভালো আছি। তখন বাড়িতে তিনজন ছিলাম। এরমধ্যে আমি, আমার স্ত্রী এবং কাজের মেয়ে। যখন বিকট শব্দ হয়ে এটি বিধ্বস্ত হয় তখন আমরা ভেবেছিলাম এটি একটি হেলিকপ্টার।’
মর্মান্তিক এ বিমান দুর্ঘটনায় ব্রাজিলে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা।