মেঘ থমথমে আকাশ। মুখকালো করে দাঁড়িয়ে আছে নর্দান আয়ারল্যান্ডের স্টোরমন্ট পার্লামেন্ট ভবন। ভবনের প্রবেশপথে বর্ণবাদ ও বিদ্বেষমূলক অপরাধের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এই থমথমে পরিবেশ বলে দেয়, কঠোর থেকে কঠোরতর অবস্থানে না গেলে স্টারমার প্রশাসনের জন্য এই দুরাবস্থা থেকে ব্রিটেনকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।
ব্রিটেনের বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমরা একেবারেই নিরাপদ নই। এমনকি আমরা দোকানে যেতেও ভয় পাচ্ছি। আপনি আপনার পরিচিতদের জন্য উদ্বিগ্ন। বিপদে পড়লে তারা কোথায় যাবে?’
আরেকজন বলেন, ‘গেল আট মাস ধরে ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার প্রতিবাদ করেছি। এখন কৃষ্ণাঙ্গ ও অভিবাসী কর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ জানাতে এসেছি। তাদের পরিবার ও কমিউনিটির সুরক্ষার দাবিতে জড়ো হয়েছি।’
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস জুড়ে বিক্ষোভের আশঙ্কায় অন্তত ৬ হাজার নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করছে স্টারমার প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত আটক ৫ শতাধিক বিক্ষোভকারীর মধ্যে ১৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আটককৃতদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানাচ্ছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
এমন বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সাথে এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো জরুরি বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মমর্তারা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আটককৃতদের প্রায় ২৭ শতাংশের বয়েস ২১ বছরের কম। আটক হওয়া ২৫ শতাংশ বিক্ষোভকারী ২১ থেকে ৩১ বছর বয়সী। অর্থাৎ আন্দোলনকারীদের অধিকাংশই তরুণ প্রজন্মের। এছাড়া, সবচেয়ে প্রবীন বিক্ষোভকারী যিনি আটক হয়েছেন তার বয়স ৬৯।
ব্রিটনের গণমাধ্যমগুলো দাবি করছিল কিং চার্লস দাঙ্গা হয়েছে এমন এলাকা পরিদর্শন করবেন। তবে, দাপ্তরিক এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চলমান আন্দোলন সম্পর্কে খোঁজখবর রাখছেন কিং চার্লস। যদিও এই মুহূর্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কোনো পরিকল্পনা নেই তার।
গত সপ্তাহের সোমবার যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টের এক নৃত্য কর্মশালায় ছুরিকাঘাতে তিন কিশোরীর মৃত্যুর পর হামলাকারীর পরিচয় সংক্রান্ত তথ্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয় এই বিক্ষোভ। ঘটনার পর জানা যায়, আক্রমণকারী একজন শরণার্থী ও মুসলিম। এই তথ্যকে কেন্দ্র করে সাউথপোর্ট পরিণত হয় রণক্ষেত্রে, যার রেশ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাজ্যের একাধিক শহরে।