বিশ্বের অন্যতম ধনী শহর যুক্তরাজ্যের লন্ডন। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য লন্ডনে স্থায়ী ঠিকানা গড়েছেন এমন বিত্তবানের সংখ্যাও কম নয়।
ইউরোপের বৃহত্তম এই শহরে বাস করছেন এমন মিলিওনেয়ার সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। আর অন্তত ৩৫ বিলিওনেয়ার বাস করেন বিশ্বের অন্যতম ধনী এই শহরে। তবে অভিজাতদের চারণভূমি হলেও এই শহরের রয়েছে ভিন্ন আরেক গল্প।
মূলত সেন্ট্রাল লন্ডনের অভিজাত এলাকাগুলোতে ধনীদের বসবাস। যেখানে প্রতি অলি-গলিতেই মিলবে দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপনা। তবে ইস্ট লন্ডনে পা রাখলে চোখে পড়বে বিপরীত চিত্র। সেখানে সাধারণ দিন যাপনের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয়রা।
ইস্ট লন্ডনের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন নির্ভর প্রতিদিনের আয়ের ওপর। ব্রেক্সিট পরবর্তী কোভিড পরিস্থিতি এবং ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের প্রভাবে টালমাটাল ব্রিটেনের অর্থনীতি। মহামারি পরবর্তী সময়ে জনগণের আয় বাড়লেও খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ হারে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কাউন্সিলর ওহিদ আহমেদ বলেন, ‘আগে মানুষের সঞ্চয় থাকতো। মানুষের আয় ছিল এবং একই সাথে খরচ কম ছিল। সে সময় মানুষ জমানো অর্থ বিনিয়োগ করতে পারতো, বাড়িঘর কিনতে পারতো। এখন ওই জিনিসটা আর নেই।’
লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা বলছেন, গেল ২০ বছরের তুলনায় এখানে জীবন ধারণ আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। কাজের অবারিত সুযোগ, বাড়ি কেনার সক্ষমতা অর্জন, পরিবার নিয়ে বসবাস করার মতো বিষয়গুলো ধীরে ধীরে আগের চেয়ে কঠিন হয়েছে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় কমেছে সঞ্চয়, তাই নতুন প্রজন্মের এই শহরে টিকে থাকা নিয়ে উদ্বেগে স্থানীয় বাংলাদেশিরা।
যুক্তরাজ্যের সমাজকর্মী হুসনা খান শেলী বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে যেভাবে জীবন যাপন ব্যয় বাড়ছে সেভাবে আয় বাড়ছে না। বিশেষ করে যারা নিম্ন আয়ের তারা অনেক কঠিন একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছে।’
লন্ডনে ধনী-গরীবের বৈষম্য যেভাবে বাড়ছে তাতে করে আরও কঠিন হচ্ছে, নিম্ন আয়ের মানুষের টিকে থাকার লড়াই। শেষ পর্যন্ত অভাবের কাছে পরাজিত হয়ে স্বপ্নের শহর লন্ডন ছাড়তে হয় কী না- এমন প্রশ্নও তাড়া করে ফিরছে খেটে খাওয়া মানুষদের।