থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানায়, সপ্তাহখানেক থমথমে অবস্থার পর মায়াবতী পুনরুদ্ধারে এগোতে চাওয়া সেনাদের গাড়িবহর থামিয়ে শতাধিক সেনাকে হত্যা করে বিদ্রোহীরা। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে সেতুর কাছে আশ্রয় নেয়া বাকি দেড়শ' সেনাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় মায়াবতী দখল করা ক্যারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি। রাতভর ড্রোন দিয়ে বোমাবর্ষণের পর শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার লক্ষ্যে শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে হামলা শুরু করে বিদ্রোহীরা।
নতুন করে সংঘাত শুরুর পরই মায়াবতীতে থেকে যাওয়া বাকি সেনাসদস্যদের রক্ষায় বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে টানা বিমান হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমার জান্তা। যুদ্ধবিমান থেকে এ পর্যন্ত দেড়শ'র বেশি বোমা ফেলা হয়েছে যার মধ্যে কমপক্ষে সাতটি বোমা পড়েছে সীমান্তরক্ষায় মোতায়েন থাই সেনাদের ওপর।
সংঘাত থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মানুষ মোয়েই নদী সাঁতরে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করেছে। শনিবারই প্রায় ১২শ' মানুষ দু'টি অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানায় থাই সংবাদমাধ্যম। আশ্রিতদের তথ্য অনুযায়ী, জান্তার বিমান হামলায় প্রাণ গেছে বেশ কয়েকজন বেসামরিক বাসিন্দার।
গেল প্রায় দু'সপ্তাহে মায়াবতীর নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে বারবার চেষ্টা ব্যর্থ হয় সেনাবাহিনীর। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বাণিজ্য শহরটি তারল্য সংকটে জর্জরিত জান্তার জন্য অর্থনৈতিকভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। মিয়ানমারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরে মায়াবতী হয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১১০ কোটি ডলার। এমন পরিস্থিতিতে মায়াবতীর নিয়ন্ত্রণ হারানো জান্তা প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে আবারও নামে শহর পুনরুদ্ধার অভিযানে।
অভ্যুত্থানের তিন বছর পেরিয়ে দেশজুড়ে বিদ্রোহীদের সংঘবদ্ধ আক্রমণে নাকাল মিয়ানমার জান্তা। বাহিনীর কোণঠাসা অবস্থায় জনতার দাবি মেনে নিয়ে বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে সেনাপ্রধানের প্রতি আহ্বান বিদ্রোহীদের। জান্তার পতন ঘনিয়ে এসেছে বলে মত বিশ্লেষকদেরও।