বিদেশে এখন
0

তাইওয়ানকে কোণঠাসা করতে মরিয়া চীন

নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য তাইওয়ানকে অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে চীন। বিভিন্ন পণ্যে বেইজিংয়ের আমদানি নিষেধাজ্ঞার পর এমন অভিযোগ তুলেছে দ্বীপাঞ্চলটির ক্ষমতাসীন দল ডিপিপি।

চীন সমর্থিত শক্তিশালী বিরোধী দল কুওমিনতাংকে ক্ষমতায় আনতে বেইজিংয়ের এটি কৌশল হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

২০১৬ সালে তাইওয়ানের ক্ষমতায় আসেন চীনা বিরোধী প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন। এরপর তার সরকারকে দুর্বল করতে নানা কৌশলে এগোয় দ্বীপাঞ্চলটিকে নিজেদের বলে দাবি করা চীন। তাইওয়ান প্রণালীর চারপাশে সামরিক মহড়াও বাড়ানো হয়। এমনকি স্ব-শাসিত দ্বীপটিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে তৎপর হয়ে ওঠে বেইজিং।

শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিকভাবেও বেকায়দায় ফেলতে ২০১৯ সালে পর্যটকদের তাইওয়ান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নানা যুক্তি দেখিয়ে ২০২১ সালে চীনে থাকা তাইওয়ানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানার আওতায় আনা হয়। এমনকি ফল থেকে মাছ, অর্থকরী অনেক কৃষিপণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ২০২২ সালের আগস্টে মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর বিস্কুট ও পেস্ট্রিসহ ২ হাজারের বেশি পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে চীন।

১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন ঘিরেও এসব প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে চীন। এরই মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি লঙ্ঘনের দাবি তুলে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকেই তাইওয়ানের অনেক রাসায়নিক পণ্যের ওপর থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করেছে বেইজিং। সবমিলিয়ে তাইওয়ানের কৃষকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমন এই দ্বীপাঞ্চলের অর্থনীতিতেও বিরুপ প্রভাব পড়ছে।

ভোটারদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়ে এসে চীনের এসব পদক্ষেপকে অর্থনৈতিক জবরদস্তি হিসেবে দেখছে তাইওয়ান। যার মাধ্যমে নির্বাচনে চীন প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বেশিরভাগ কৃষকই দক্ষিণ তাইওয়ানে বাস করেন, যে অঞ্চলকে ক্ষমতাসীন দল ডিপিপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

দ্বীপাঞ্চলটির তথ্য বলছে, ২০১১ সালে চীনে কর্মরত তাইওয়ানের জনশক্তি ছিল ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি। ২০২১ সালে যা নেমে এসেছে এক লাখ ৬৩ হাজারে। এ অবস্থায় চীনে থাকা তাইওয়ানের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কর্মীরা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তাই চীনের ওপর তাইওয়ানের অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমাতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর