বিদেশে এখন
0

ইসরাইলি পরিকল্পনার স্পষ্ট বিরোধিতা যুক্তরাষ্ট্রের

ফিলিস্তিনিদের গাজা উপত্যকা থেকে উৎখাতে ইসরাইলি পরিকল্পনার স্পষ্ট বিরোধিতা করলো যুক্তরাষ্ট্র।

মধ্যপ্রাচ্যে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার আরব রাষ্ট্রগুলোকে আশ্বস্ত করে বলেন, গাজা ছাড়তে কোনো ফিলিস্তিনিকে বাধ্য করা যাবে না।

এদিকে ইসরাইলি সেনাদের চাপে গাজার আল-আকসা হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য ৬০০ রোগী নিখোঁজ বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

যুদ্ধের চতুর্থ মাসও গড়ালেও সহিংসতা এতোটুকু কমেনি অবরুদ্ধ গাজায়। ইসরাইলি আগ্রাসনের ৯২ দিনে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২৩ হাজারের কাছাকাছি, আহত ৫৮ হাজারের বেশি। যুদ্ধাহত মানুষের আর্তনাদে কান পাতা দায় উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে। সেখানেও হানা দিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।

গাজার মাঝামাঝিতে অবস্থা আল-আকসা হাসপাতালে ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ রোগী থাকলেও জনবলের মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ নিয়ে তাদের সেবা দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর ওপর ইসরাইলের চাপে হাসপাতাল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসসহ তিনটি আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাদের চাপে গাজার আল-আকসা হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য ৬শ' রোগীর খোঁজ মিলছে না।

ডব্লিউএইচও’র ইমার্জেন্সি মেডিকেল টিম কোঅর্ডিনেটর শন কেসি বলেন, হাসপাতালের পরিচালক আমাদের একটাই অনুরোধ করেছেন, যেন হাসপাতালটাকে সুরক্ষিত রাখা হয়। অনেক স্বাস্থ্যকর্মী চলে গেছেন, তাও ভীষণ চাপ নিয়ে হলেও রোগীদের সেবা দিচ্ছেন বাকি চিকিৎসকরা। সব হাসপাতালে হামলা ঠেকাতে, রোগীদের হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য না করতে এবং হাসপাতালগুলোকে কার্যক্ষম রাখতে বিশ্ব সম্প্রদায়কেই এগিয়ে আসতে হবে।

গাজাকে ঝাঁজরা করে দিয়েও এতোটুকু নমনীয় নন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। রোববারও ঘোষণা দিয়েছেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, বিজয় নিশ্চিতের আগ পর্যন্ত আমরা থামবো না। হামাসকে নির্মূল, সব বন্দিদের ফিরিয়ে আনা এবং ইসরাইলের জন্য গাজার হুমকি শূন্যে নামিয়ে আনা পর্যন্ত এ যুদ্ধ থামতে দেয়া যাবে না। আমাদের শত্রু, বন্ধু সব পক্ষকেই জানাচ্ছি, এটা আমাদের দায়িত্ব। পূর্ণাঙ্গ বিজয় নিশ্চিত হওয়ার আগে বাকি সব বিষয় গুরুত্বহীন।

এদিকে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে স্থায়ীভাবে অন্য দেশে পুনর্বাসনে ইসরাইলের পরিকল্পনার স্পষ্ট বিরোধিতা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলি কয়েকজন মন্ত্রীর বিবৃতির সমালোচনা করে কাতার সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজা ছাড়তে কোনো ফিলিস্তিনিকে বাধ্য করা যাবে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের নিজ বাড়িতেও ফিরতে দিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফেরাতে যা যা করা দরকার, তা করতে হবে। তাদেরকে গাজা ছাড়তে চাপ দেয়া যাবে না। গাজার বাইরে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের কথা বলছেন ইসরাইলের কিছু মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা। এসব বক্তব্য স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান করছি। এসব দায়িত্বজ্ঞানহীন, উসকানিমূলক বক্তব্য, যা ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটকে আরও জটিল করে তুলবে।

গাজার পরিস্থিতি ও অস্ত্রবিরতির আলোচনায় অগ্রগতির উদ্দেশ্যে জর্ডান, তুর্কিয়ে ও কাতার সফরের পর রোববার রাতেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে পৌঁছান ব্লিংকেন। সোমবার সৌদি আরবেও যাওয়ার কথা রয়েছে তার। গাজার সহিংসতা যেন অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিতে শান্তি আলোচনার জন্য এ নিয়ে তিন মাসে ব্লিংকেনের এটি চতুর্থ মধ্যপ্রাচ্য সফর।