ইসরাইলের বিচারিক সংস্কার আইন বাতিল

0

বিচার বিভাগের সংস্কারের নামে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের পাস করা বিতর্কিত আইনটি বাতিল করে দিয়েছে ইসরাইলি সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলছে, আইনটিতে বিচার বিভাগের কাছ থেকে সরকারি যেকোন সিদ্ধান্ত বাতিলের ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছিল।

ইসরাইলের কোন সংবিধান নেই, বেশকিছু মৌলিক আইনের একটি সেটের উপর ভর করে সরকার পরিচালিত হয়। দেশটির ডানপন্থি নেতা নেতানিয়াহু ক্ষমতায় বসেই প্রথমে বিচার বিভাগের ওপর হাত দেন। সংস্কারের নামে মূলত সুপ্রিম কোর্টের নির্বাহী ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়।

দীর্ঘ ৭ মাস বিতর্কের পর গত বছরের জুলাইয়ে ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটে যৌক্তিকতা নামে আইনটি পাস করিয়ে নেয় নেতানিয়াহু সরকার। বিরোধী আইন প্রণেতাদের পার্লামেন্ট বর্জন ও ব্যাপক বিরোধিতার মুখে বিলটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়।

এর আগে ইসরাইল সরকারের নেয়া যেকোন সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা বা বাতিলের ক্ষমতা ছিল বিচার বিভাগের হাতে। নতুন আইন পাসের পর বিচার বিভাগ সেই ক্ষমতা হারায়। মূলত সুপ্রিম কোর্টকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই পদক্ষেপ নেয় নেতানিয়াহু।

আইনটি পাসের প্রতিবাদে ইসরাইলজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন-বিক্ষোভ হয়। ইসরাইলি সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। দেশটির কয়েক হাজার সেনা পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিল। আইনটি পাসের পর সমালোচনায় মুখর ছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা। যা নেতানিয়াহুর সরকারকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে চাপে ফেলে দেয়।

এবার এই আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিল করে দিয়েছে ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্ট। একটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ১৫ জনের মধ্যে ৮ জন বিচারক আইনটি বাতিলের পক্ষে রায় দেন।

নেতানিয়াহু'র লিকুদ পার্টি এই সিদ্ধান্তকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছে। আইনটির কারিগর ও দেশটির বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন বিচারকদের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত ও পার্লামেন্টের আইন প্রণয়নের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে বিচার বিভাগ। যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। বিচারব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা আরও কমে যাবে। আমাদের সংস্কারের প্রস্তাবে বিচার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা ছিল।

অন্যদিকে এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিড বলেন, জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এই আইন বাতিল করে দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করা হয়েছে।