রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করলে ভারতকে চড়া শুল্কে পড়তে হবে: ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি: সংগৃহীত
0

রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা না করলে ভারতকে চড়া শুল্ক দিয়ে যেতে হবে বলে আবারও মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর কিছু ক্ষেত্রে বেইজিং ওয়াশিংটনকে ছাড় দিলে, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানো হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। এদিকে শুল্ক যুদ্ধের মধ্যেই এপেক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। যেখানে শুল্ক ইস্যুতে চীনের শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প।

গেল বুধবার (১৫ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধের বিষয়ে তাকে আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর পরপরই বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসে নয়াদিল্লি। ট্রাম্প-মোদির ফোনালাপের বিষয়ে কোন তথ্য নেই বলে জানায় ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর।

নয়াদিল্লির এমন মন্তব্যের পর রোববার দ্বিতীয় দফায় আবারও মোদির সঙ্গে ফোনালাপের প্রসঙ্গ টেনেছেন ট্রাম্প। দাবি করেন, মস্কোর তেল কেনা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদি। কিন্তু এই কথা না রাখলে ভারতকে চড়া শুল্ক দিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ছাড়াও গেল ২৭ আগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অতিরিক্ত এই শুল্ক বসানোর কারণ ছিল মস্কো থেকে তেল আমদানি করা। একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, এই ঘোষণার পর নয়াদিল্লির সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ধরে রাখতে তেল আমদানিতে ভারতকে বিশেষ মূল্য ছাড় দিচ্ছেন পুতিন। তবে, যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো বিকল্প উৎস থেকে সুবিধাজনক প্রস্তাব এলে মস্কোর ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর কথা জানায় নয়াদিল্লি।

আরও পড়ুন:

ভারত ছাড়াও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধ জিইয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। আগামী নভেম্বর থেকে অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি। তবে এবার কিছুটা সুর নরম করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। স্বীকার করেছেন, কিছু ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনকে ছাড় দিলে চীনা পণ্যে শুল্ক কমানোর কথা ভাববেন তিনি। পাশাপাশি চীন থেকে সয়াবিন আমদানি করার ঘোষণাও দিয়েছেন ট্রাম্প।

গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, ট্রাম্পের সঙ্গে নমনীয় হবেন না চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বরং প্রথমেই রক্ষা করবেন বেইজিংয়ের স্বার্থ। কারণ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে দেখা যাচ্ছে, গেল বছরের তুলনায় চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত। বছর শেষে যা পৌঁছাবে পাঁচ শতাংশে। ফলে ট্রাম্পের শুল্কনীতি চীনের জন্য কোনো বড় বাধা হবে না এমনটাই ধারণা বিশ্লেষকদের।

এমন প্রেক্ষাপটে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন, এপেক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। দুর্লভ খনিজের বাজার ও শুল্ক ইস্যুতে এপেক সম্মেলনের সাইড লাইনে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প ও শি। অক্টোবরের ৩১ থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দুই দিনের এই সম্মেলন থেকে চীন-যুক্তরাষ্ট্র কোনো সমাধানে পৌছাতে পারে কী না- সেদিকেই নজর থাকবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের।

এসএস