ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাবে মন্দার মুখে যুক্তরাষ্ট্র, ঝুঁকিতে বিশ্ব অর্থনীতি

ট্রাম্পের শুল্কারোপে বিশ্ববাণিজ্যে চাপ, যুক্তরাষ্ট্রই হবে কোণঠাসা! | এখন টিভি
0

বিশ্বব্যাপী সম্পূরক শুল্ক আরোপ করে মুক্তির আশ্বাস দিলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক মন্দার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্ব অর্থনীতিও। এদিকে ট্রাম্পের আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্কের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে বাজার হারাতে পারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত, এমনটাও আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ফিরিয়ে আনবেন স্বর্ণ যুগ। সম্পূরক শুল্ক আদায়ের মাধ্যমে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করবেন মার্কিন অর্থনীতিতে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই স্বপ্নের সাথে বাস্তবের যোগসূত্র কতখানি? এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্পূরক শুল্ক থেকে বাঁচতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো মার্কিন ভূখণ্ডে পণ্য উৎপাদন শুরু করতে বাধ্য হবে। লাভবান হবে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক ইউনিয়ন, বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ। যদিও অনেকের আশঙ্কা, এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে ছন্দ ফিরলেও সম্পূরক শুল্কের জেরে অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে পারবে না ওয়াশিংটন।

কলামিস্ট ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘গ্লোবাল মার্কেটে হবে ভয়াবহ অবস্থা। সারাবিশ্ব একটা অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে পড়ে যাবে। মাথায় রাখতে হবে যে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কখনোই অস্থিরতা পছন্দ করে না।’

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, গেল নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের হারের অন্যতম কারণ ছিল দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেছিলেন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর ম্যান্ডেট নিয়েই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বাজার এখনও চড়া।

কারণ, কলা, অ্যাভোকাডো, ভোজ্য তেল ও গরুর মাংসসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করে ওয়াশিংটন। বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রোসারি পণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে গেলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নআয়ের মানুষ। যাদের ভোটে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসেছেন ট্রাম্প।

হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছিলেন কিন্তু দ্রব্যমূল্য কমাবেন এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে, কিন্তু আমরা এখন দেখছি উল্টো। সর্বক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে। এবং আরও মজা হচ্ছে যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কারা? সবচেয়ে কম আয়ের মানুষরা।’

এদিকে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক বসলে স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এর চাহিদা কমে যাবে। যার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে।

হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘ভয়টা হচ্ছে, দাম যেন না বাড়ে সেজন্য বাংলাদেশের উৎপাদকরা কী করতে পারে? উৎপাদকরা এই খরচটা, অতিরিক্ত ব্যয়টা শ্রমিকদের উপর চাপিয়ে দিতে পারে। যে শ্রমিক এখন ১০০ টাকা বেতন পায় হয়তো আগামীকাল বেতন পাবে ৮০ টাকা।’

সংশ্লিষ্টদের মতে, পোশাকের দাম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারণ করতে গিয়ে গার্মেন্টস কর্মীদের মজুরির ওপর ছুরিকাঁচি চালাতে পারে মালিক পক্ষ। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের বাজার ধরার জন্য মুখিয়ে আছে চীন ও ভারতের মতো দেশ।

এসএস