বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে রেকর্ড, প্রতি আউন্স ২৯১১ ডলার

.
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

বিশ্ববাজারে নতুন মাইলফলক স্পর্শের পথে স্বর্ণের দাম। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছাড়িয়ে যায় রেকর্ড ২ হাজার ৯১১ মার্কিন ডলার। ক্রিপ্টোমুদ্রা আর মার্কিন ডলার নিম্নমুখী ভাবমূর্তি সরাসরি বিনিময়যোগ্য নয় বলে, বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে চাহিদা বাড়ছে স্বর্ণের।

আবারো স্বর্ণের মজুত বাড়ালো বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতি চীন। গেল জানুয়ারিতে টানা তিন মাস ধরে বাড়ার ফলে চীনে স্বর্ণের মজুত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার আউন্সে। এক মাসে মজুত বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার আউন্স।

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আকাশ ছুঁতে যাচ্ছে, এমন সময়েই এ পদক্ষেপ চীনের। সোমবার প্রথম বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য ২ হাজার ৯শ' ডলার ছাড়িয়ে যায়। একটু একটু করে আরো বাড়ছে দাম, শিগগিরই তিন হাজার ডলারের নতুন মাইলফলক স্পর্শ করবে স্বর্ণের বাজার, আশাবাদী ব্যবসায়ীরা। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে বিশ্ব রাজনীতিতে টানাপড়েনের প্রভাব পড়ছে সোনালি ধাতুতে।

ব্যারিক গোল্ডের প্রধান নির্বাহী মার্ক ব্রিসটো বলেন, ‘স্বর্ণের দাম বাড়ানোর জন্য সবাই মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমরা দেখছি যে ওয়াশিংটন ও হোয়াইট হাউসের নানা কাজে ক্ষোভের ফল হিসেবে ডলার কেন্দ্রিক অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসার জোর চেষ্টা চলছে। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ নানাবিধ সংকটে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য আর প্রতিটি মহাদেশে সংঘাত তো চলছেই। সবকিছুর ফলেই স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নতুন শুল্ক আরোপের হুমকিতে বাণিজ্য যুদ্ধের পরিধি বেড়ে চলায় উদ্বেগ বাড়ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ে। এ অবস্থায় নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে বাড়ছে স্বর্ণের চাহিদা। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য, এক বছরের ব্যবধানে ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোতে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে তাৎক্ষণিক বিক্রয়যোগ্য স্বর্ণ বা স্পট গোল্ডের দামের তুলনায় ভবিষ্যৎ চুক্তিভিত্তিক স্বর্ণ বা ফিউচার গোল্ডের দর যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বেশি। অদূর ভবিষ্যতে স্বর্ণের দাম এর চেয়ে কমবে না বলেও মত বিশ্লেষকদের।

মার্ক ব্রিসটো বলেন, ‘স্বর্ণের দাম কমার কথা নয়। অনেক কারণ আছে এর পেছনে। বিশ্ব অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে চাইলে সেজন্য কী মূল্য দিতে হবে, সেটা দেখুন। এটা সহজ কাজ নয়। ভাবমূর্তি রক্ষার মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের ক্ষতি দেখছি আমরা। সে শূন্যস্থান এখন পূরণ করছে স্বর্ণ। এছাড়া বিটকয়েন আর ক্রিপ্টোমুদ্রা হাতে হাতে বিনিময়ের কোনো মাধ্যম নয়। তাই স্বর্ণই চূড়ান্ত সম্পদ।’

গেল বছরই বিশ্ববাজারে চমক দেখায় স্বর্ণ। ২০২৪ সালে বছরজুড়ে ২৭ শতাংশ দাম বৃদ্ধির পর চলতি বছরও অব্যাহত আছে এ ধারা। ২০২৫ সালে বছরের শুরু থেকে রেকর্ড ৭ বার দর বেড়েছে স্বর্ণের, দেড় মাসের কম সময়ে দামবৃদ্ধির এ হার প্রায় ১১ শতাংশ।

ইএ