প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সামনে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে গতি ফেরানো একমাত্র লক্ষ্য। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে নানা সংস্কারের পথে হাঁটছে দেশটি।
পরিবর্তন আনা হয়েছে সরকারি দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে। তারপরও দেশটি ভুগছে বেকারত্ব, মন্থর অর্থনীতি, বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান ব্যয়, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতায়। জ্বালানি সংকটে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন খাত।
চ্যালেঞ্জিং এই সময়ে নতুন করে আঘাত এসেছে পাকিস্তানের ডিজিটাল অর্থনীতিতে। প্রায়ই ইন্টারনেটের গতি ধীর হওয়ায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা।
অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে দেশের সব ডিজিটাল সেবা। এই অবস্থার জন্য ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ও সরকার একে অন্যকে দোষারোপ করছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবার বিভ্রাট নিয়ে অবশেষে মুখ খুললো পাকিস্তান সরকার। দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী সাজা ফাতিমা খাজা বলেন, ‘ইন্টারনেটের গতি কমার পেছনে সরকারের কোনো হাত নেই। ভিপিএনের অতিরিক্ত ব্যবহারে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
সাজা ফাতিমা খাজা বলেন, পাকিস্তানের সবাই একসঙ্গে ভিপিএন ব্যবহার করার ফলে ইন্টারনেটের গতি কমেছে। মোবাইলে ভিপিএন ব্যবহার করলে ফোন ধীরগতি হয়ে যায়। যখন দূরের কোনো সার্ভারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়, তখন লোকাল সার্ভারে চাপ পড়ে।’
সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ বা গতি কমানো হয়নি। এ বিষয়ে যেসব তথ্য ছড়িয়েছে সেগুলো মিথ্যা। পাকিস্তানের বিশাল জনগোষ্ঠী ভিপিএন ব্যবহার করার ফলে ইন্টারনেটের গতি কমে গেছে।
এদিকে, ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার শঙ্কায় পাকিস্তান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের অফিস অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে।
দুবাই চেম্বার অব কমার্সের এক প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৬৮টি পাকিস্তানি কোম্পানি দুবাইয়ে নিবন্ধিত হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
শুধু তাই নয়, কয়েক হাজার দক্ষ কর্মীও ইতোমধ্যে পাকিস্তান ছেড়েছে। বিদেশে কাজের সন্ধান করছে আরও কয়েক লাখ পাকিস্তানি। যা প্রভাব ফেলেছে সরকারের অর্থনৈতিক নীতি ও আস্থার ওপর।
সম্প্রতি ইন্টারনেট বিভ্রাটে দেশটির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার। প্রভাব পড়েছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। পাকিস্তানের বাণিজ্য পরিষদ বলছে, সরকারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষি ও পর্যটনের পাশাপাশি গুরুত্ব দিতে হবে প্রযুক্তি খাতে।
বর্তমান বিশ্বে টিকে থাকার জন্য উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবার বিকল্প নেই। বার বার ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় হোঁচট খাচ্ছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অগ্রগতি।