অবিকল মানুষের মতো দেখতে, হরহামেশাই এমন রোবট বানিয়ে বিশ্ববাসীকে তাক লাগাচ্ছেন প্রকৌশলীরা। বাহ্যিক গঠন ছাড়াও মানুষের প্রকৃত স্বভাব, মনে রাখার প্রবণতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক আচরণ করতে সক্ষম এমন যন্ত্রমানবের সফল ডেমোস্ট্রেশনও দেখেছে বিশ্ববাসী।
মানুষের যন্ত্র নির্ভরতার একটা বড় জায়গা দখল করে আছে স্মার্টফোন। বিশেষ করে সহজ অপারেটিং সিস্টেম 'অ্যান্ড্রয়েড'এর কারণে স্মার্টফোনের ওপর গ্রাহকদের নির্ভরশীলতা বাড়ছে এমনটা মনে করেন প্রযুক্তিবিদরা। এই অপারেটিং সিস্টেম হিউম্যানয়েড রোবটে ইন্সটল করতে পারলে, রোবটিক্সের দুনিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হবে এমন পর্যবেক্ষণও দেখা গেছে টেক ম্যাগাজিন ও পডকাস্টে।
কল্পনা আর বাস্তবের এই মিশেল চাক্ষুষ দেখা গেল এবারের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন হিউম্যানয়েড রোবটস। ফ্রান্সের ন্যান্সি শহরে আয়োজিত এবারের কনফারেন্সে অংশ নিয়ে মানবিক রোবটের প্রদর্শনী করেছে ৩০টিরও বেশি রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। আয়োজনের মূল চমক ছিল, 'অ্যান্ড্রয়েড' অপারেটিং সিস্টেম নির্ভর যন্ত্রমানব। প্রকৌশলীরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির এই রোবটের সক্ষমতা বাড়ানো যাবে কয়েক ধাপে। এছাড়া রোবট মেকানিজম আপগ্রেড করার সুযোগ থাকায়, এই নতুন সংস্করণ রোবোটিক্স দুনিয়ায় রাজত্ব করবে এমন আভাস দিচ্ছেন গবেষকরা।
ইউনিভার্সিটি অব লরিনের গবেষণা বিভাগের পরিচালক সেরিনা আইভ্যাল্ডি বলেন, 'নতুন এই রোবটের এআই প্রযুক্তি যেকোনো ছবি বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। এছাড়া যেকোনো ভাষাও বুঝতে পারবে রোবটটি। আমরা এমন একটি যন্ত্রমানব তৈরির পথে হাঁটছি, যা আগের চেয়ে আরও বুদ্ধিদীপ্ত উপায়ে ভাবের আদান প্রদান করতে পারবে। নির্দেশ অনুসরণ করে সে মোতাবেক কাজ করতে ও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে।'
তিনি জানান, রোবট নির্মাণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির দাম কমতে শুরু করায় তরুণ উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তারা রোবটিক্সের স্টার্ট আপ নিয়ে ভাবছেন। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে বা জটিল পরিস্থিতিতে বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ করতে রোবটের যে ব্রেইন পাওয়ার প্রয়োজন, এই প্রজন্মের বিজ্ঞানীরা সেটি উন্নত করতে কাজ করবেন এমন প্রত্যাশাও করেন এই গবেষক।
হিউম্যানয়েড রোবটিক্সের দুনিয়ায় এআই-এর ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পথে হাঁটছে মাইক্রোসফট, গুগল, মেটা, এনভিডিয়া ও আমাজনের মতো টেক জায়ান্ট। এআই ও ক্লাউড ড্রাইভ ফিচার আরও সমৃদ্ধ করতে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও ইসরাইলের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮ হাজার কোটি ডলার খরচ করতে যাচ্ছে তারা। আর টেসলা সিইও ইলন মাস্কের দাবি, ২০৪০ সাল নাগাদ বিশ্ববাজারে অন্তত এক হাজার কোটি হিউম্যানয়েড রোবট পাওয়া যাবে। যার বাজার মূল্য হবে, ২০ থেকে ২৫ হাজার মার্কিন ডলার।