প্রবাস
0

আরব আমিরাতে সুনাম কুড়াচ্ছে বাংলাদেশি ট্যাক্সি চালকরা

আবিদ মঈন

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন ট্যাক্সি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন কয়েক হাজার বাংলাদেশি। চাকরিতে প্রবেশের আগে প্রশিক্ষণ নেয়ার পাশাপাশি দিতে হয় পরীক্ষা। যে কারণে লাইসেন্স তৈরি থেকে শুরু করে গাড়ি হাতে পাওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে একেকজন পরিণত হন দক্ষ চালকে। এতে যাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি নিশ্চিত করা যায় মালপত্রের সুরক্ষা।

প্রায় ৮ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ট্যাক্সি চালক হিসেবে কাজ করছেন আল আমিন হোসেন। রংপুরের এই সন্তানের ট্যাক্সিতে সম্প্রতি এক জার্মান দম্পতি ফেলে যান মানিব্যাগ, মূল্যবান ইউরো ও ব্যাংক কার্ড। যা ফেরত দিয়ে প্রশংসিত হন তিনি।

মাত্র ৫২৫ দিরহাম বেসিক বেতনে প্রবাস জীবন শুরু করা আল আমিন দুই বছরের মাথায় পান ড্রাইভিং লাইসেন্স। এরপর বেতন পৌঁছে ২ হাজার দিরহামে।

আমিরাতের ১৩ বছর প্রবাস জীবনের প্রায় ৮ বছরই দুবাইয়ে ট্যাক্সিতে কাজ করছেন কুমিল্লার রবি উল্লাহ। কয়েক সপ্তাহ আগে গাড়িতে ফেলে যাওয়া যাত্রীর একটি আইফোন ফেরত দিয়ে প্রশংসা কুড়ান তিনি। কুড়িগ্রামের সঞ্জিত কুমার দুবাই ট্যাক্সিতে যোগ দিয়েছেন প্রায় দুই বছর। একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন তিনিও।

আল আমিন, রবি উল্লাহ বা সঞ্জিত কুমারের মতো অনেকেরই অভিজ্ঞতা প্রায় একই রকম। জানা যায়- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও মিশরসহ বেশ কিছু দেশের কয়েক হাজার প্রবাসী দুবাইয়ে ট্যাক্সি চালক হিসেবে কাজ করছেন নিয়মিত। একেকজন চালককে কাজ করতে হয় দৈনিক ১২ ঘণ্টা। বেশিরভাগের বেতন হয় কমিশনের ভিত্তিতে। বেতন তারতম্যে পার্থক্য থাকলেও সততার প্রশ্নে এখনো অনড় এই প্রবাসীরা।

গাড়িতে ফেলে যাওয়া মালপত্র ফেরতের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আরটিএ) ও সংশ্লিষ্ট ট্যাক্সি প্রতিষ্ঠান। হারানো জিনিস ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত যত্ন সহকারে রেখে দেন চালকেরা। এ সময়ের মধ্যে মালপত্র বুঝিয়ে দিতে হয় যাত্রীকে, সময় পেরিয়ে গেলে জমা দিতে হয় নিকটস্থ থানায়। চালকরা জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স করার সময় প্রাতিষ্ঠানিক দিকনির্দেশনা ও গ্রাহকের সঙ্গে কথোপকথনের প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন তারা।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির ট্যাক্সি প্রতিষ্ঠানগুলোয় রয়েছে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ নামের আলাদা দপ্তর। এছাড়াও গাড়িতে থাকা ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটর করা হয় চালকদের। এটি একদিকে যেমন চালকদের সঠিক পথের নিয়ন্ত্রক, অন্যদিকে যাত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় উদাহরণ।

এএম