দেশে চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে থাকে সাড়ে চার হাজারের বেশি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি। যার ৯২ শতাংশই আমদানিনির্ভর।
ছোট-বড় প্রায় ৫০০টি প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি আমদানি করে। মূলত চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় এসব পণ্য। কিন্তু আমদানিকারকদের ৮০ শতাংশের নেই ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিবন্ধন।
দেশে মেডিকেল পণ্য ও যন্ত্র তৈরির নিবন্ধন আছে আটটি প্রতিষ্ঠানের। এসব কোম্পানি কিছু কিছু মেডিকেল সরঞ্জাম উৎপাদন করলেও বাজারে রয়েছে আস্থার সংকট। কোম্পানিগুলো বলছে, দেশিয় এসব সরঞ্জাম বিদেশি কোম্পানিগুলোর তুলনায় গুণে-মানে কোনো অংশেই কম নয়। উপরন্তু দামেও সস্তা।
দেশিয় সরঞ্জাম তৈরি করা এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা যে ধরনের চাইনিজ অ্যানেস্থেসিয়া মেশিনের সাথে কমপেয়ার করে আমাদের যে মেশিনগুলো করা হচ্ছে তা অত্যন্ত ভালো মানের।'
একজন উৎপাদক বলেন, 'আমার নিজস্ব ফ্যাক্টরি রয়েছে। এবং আমার এটি তৈরি করার অনুমতির সার্টিফিকেট রয়েছে। আমাদের ফ্যাক্টরিতে প্রায় ১৫০ এর বেশি প্রোডাক্ট তৈরি হয়।'
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানির নিবন্ধন নিতে ওষুধ প্রশাসনকে লাইসেন্স বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়। দুই বছর পর পর এই লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম রয়েছে। মেডিকেল সরঞ্জাম ও যন্ত্র উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে দরকার সরকারের নীতি ও আর্থিক সহায়তা।
উৎপাদকদের মধ্যে একজন বলেন, 'যদি রপ্তানি করতে হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারের সহায়তার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। র ম্যাটেরিয়ালের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গা থেকে পারমিশন নিতে হচ্ছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে পারমিশন পাওয়া যাচ্ছে না।'
ওষুধ প্রশাসনের তথ্যমতে, প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের সার্জিক্যাল ও ইলেকট্রনিক চিকিৎসার যন্ত্রপাতি বিক্রি হয় দেশে। এ ব্যবসায়ে প্রায় ৫০০ আমদানিকারক রয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ৮৯ জনের ওষুধ প্রশাসনের নিবন্ধন রয়েছে।
এদিকে দেশের চিকিৎসা প্রযুক্তিতে নিত্য নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে পরিচিতির লক্ষ্যে তৃতীয়বারের মতো রাজধানীর কুড়িলে আইসিসিবিতে চলছে বাংলা মেড এক্সপো। ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। এক্সপোতে ১৫০টি স্টলে ২৫০টির বেশি কোম্পানির পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। আয়োজকেরা জানায়, আমদানিকারক, ক্রেতা ও সেবা গ্রহীতাকে সংযুক্ত করবে এ মেলা।
আয়োজকদের মধ্যে একজন বলেন, 'এখানে বিভিন্ন ধরনের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যারা আছে তারা আসে, ডাক্তাররা পার্সোনালি আসে।'
উৎপাদকদের মধ্যে একজন বলেন, 'বাংলাদেশে যে আমরা এ ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে এসেছি এবং দিচ্ছি এটা প্রচারের জন্যই এ মেলায় আসা।'
কোভিড মহামারির সময় বাংলাদেশ পিপিই তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করে। জেএমআই ইতিমধ্যে ৩০টি ইকুইপমেন্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতে রপ্তানি করেছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে মেডিকেল ইকুইপমেন্টের বাজার ধরার সুযোগ রয়েছে।