ময়মনসিংহ মেডিকেলে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গু রোগী। তীব্র জ্বর, শরীর ব্যাথা, বমি, ডায়রিয়াসহ নানা উপসর্গ নিয়ে আসছেন রোগীরা। এদের বেশিরভাগ ঢাকায় আক্রান্ত হলেও ময়মনসিংহে আক্রান্ত হয়েছে এমন রোগীর সংখ্যাও কম নয়।
ডেঙ্গু রোগী নাঈম। ছবি: এখন টিভি।
নগরীর মাসকান্দা এলাকার শিক্ষার্থী নাঈম ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ১০ দিন আগে। অসহ্য ব্যাথা ও বমি নিয়ে আগে ভর্তি হন ময়মনসিংহ মেডিকেলে। ভর্তির পর থেকে দ্রুত কমতে থাকে রক্তের প্লাটিলেট। দেয়া হচ্ছে স্যালাইন।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডের বেডগুলো যেন এক একটা মশারি ঘর। যার ভেতরে থাকা মানুষগুলোর দুভোর্গ আরও বাড়িয়েছে চলমান তাপপ্রবাহ। শারীরিক যন্ত্রণার সাথে অসহনীয় গরমে কাহিল অবস্থা তাদের।
ডেঙ্গু রোগী নাঈম জানান, প্রথমে জ্বর ছিল তারপর মাথাব্যাথা সাথে শরীর ব্যাথা। আর পরেরদিন থেকেই মাথাব্যাথার সাথে বমি।
অন্য রোগীদের মধ্যে একজন জানান, ঢাকা গেছিলাম বেড়াতে । তারপর বাড়িতে আসার পর জ্বর। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বোঝা যাচ্ছে এটা ডেঙ্গু জ্বর।
নগরীতে ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ ড্রেন-খালগুলো মশার লার্ভায় সয়লাব। অপরিচ্ছন্ন বাড়ির আঙিনা, কনস্ট্রাকশন সাইটে জমে থাকা পানিতেও বিস্তার বাড়ছে মশার। মশার উপদ্রবে নতুন করে ডেঙ্গুর চোখ রাঙানিতে ভিত নগরবাসী। মাঝে মাঝে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও তাতে কোনো কাজ হয় না বলে রয়েছে অভিযোগ।
নগরবাসিদের মধ্যে একজন অভিযোগ জানান, মশার উৎপাদন বেশি। সরকার এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয় নাই।
জনবল সংকটে এক সাথে সব ওয়ার্ডে মশক নিধনে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক মজুমদার বলেন, 'সাধারণ বাসা বাড়িতে আমরা সবসময় দিতে পারছি না লোকবল সংকটের কারণে। কিন্তু বাইরে থেকে অতিরিক্ত লোক এনে আমরা ক্রাশ প্রোগাম করি ২ মাস পর পর।'
এদিকে এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে না পারলে ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন চিকিৎসকরা। সিভিল সার্জন জানান, ডেঙ্গু মোকাবিলায় জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু কর্নার করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো রেডি আছে। পর্যাপ্ত স্যালাইন রেডি আছে। যদি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায় তাহলে আমরা রোগীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।'
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মহিউদ্দিন খান মুন বলেন, 'হাসপাতালে যখন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল তখনই ডেডিকেটেড ডেঙ্গু ইউনিটটা আমরা আবার চালু করেছি। সেখানে ডাক্তার, নার্স সবই আছে রোগীদের চিকিৎসা করার জন্য।'
গত ৫ দিনে ভর্তি হওয়া ৭৫ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৮ জন।