আর নাউরু, কুক দ্বীপপুঞ্জ ও পালাউয়ে স্থূলতার হার ৩০ শতাংশ। আর কুয়েত, জর্ডান ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলোতেও তাদের জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ স্থূল। অন্যদিকে কম ওজনের তালিকায় আছেন ভারতীয় নারীরা।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন দ্য ল্যানসেটের স্থূলতা দিবসের প্রতিবেদনে চমকে দেয়ার মতো তথ্য উঠে এসেছে। ১৯৯০ সালে বিশ্বে স্থূলকায় ছিলো ২২ কোটি ৬০ লাখ। এখন তা দাঁড়িয়েছে ১০৩ কোটি ৮০ লাখে। ৩২ বছরের সময়সীমা নিয়ে করা ওই গবেষণায় দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি মোটা হচ্ছে শিশুরা। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে স্থূলতা বেড়েছে আড়াইগুণ। আর শিশু, কিশোর-কিশোরীদের বৃদ্ধির হার চারগুণ।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একইসময়ে কম ওজনের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কমেছে প্রায় ৫০ ভাগ। এছাড়া একসময় যেসব দেশে ওজন কম হওয়াকে উদ্বেগ হিসেবে দেখা হতো- এখন সেসব দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে স্থূলতা। শুধু তাই নয়, অনেক উচ্চ আয়ের দেশ.বিশেষ করে ইউরোপে স্থূলতার হার অনেকটা স্থবির। সেই তুলনায় নিম্ন বা মধ্যম আয়ের দেশে ওজনদার মানুষ বেড়েছে।
এই অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা একটি দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল অসুস্থতা। এ কারণে হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মহামারি, খাদ্যাভাস প্রভাব ফেলেছে স্থূলতায়। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাবারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। স্থূলতা মোকাবিলায় মিষ্টিজাতীয় খাবারে কর আরোপ ও স্কুলে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনে গুরুত্ব দিতে বলেছে জাতিসংঘ।
ডব্লিউএইচও-এর পুষ্টি ও খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের পরিচালক ফ্রান্সস্কো ব্র্যাঙ্কা বলেন, স্থূলতার হার বিশ্বের সব দেশেই বাড়ছে। অল্প কয়েকটি দেশ স্থূলতার হার কম রাখতে পেরেছে। উচ্চ ও নিম্ন আয়ের দু'দেশেই স্থূলতার হার অনেক বেড়েছে। উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে স্থূলতা ব্যাপক হারে বেড়েছে।
বিশ্বের অনেক দেশে অপুষ্টি ও স্থূলতা দুই সমস্যা নিয়েই উদ্বেগ আছে। একসময় কেবল উন্নত বিশ্বেই এই সমস্যা সীমাবদ্ধ ছিলো। এখন যা দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি জনসংখ্যা স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনে ভুগবে। এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশন।