নীলাভ জলরাশি তীরের কাছাকাছি এসে রূপ নিচ্ছে বাদামি কিংবা হাল্কা লালচে বর্ণে। বিশাল অংশজুড়ে পানির এমন রঙ দেখে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে পর্যটকদের মাঝে।
অনেকেই দূষিত নোংরা পানি ভেবে পানিতে নামছেন না। তবে যারা পানিতে নেমেছেন তাদের মাঝেও দেখা গেছে অস্বস্তি এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকির শঙ্কা।
পর্যটকদের একজন বলেন, 'এবার দেখতে পাচ্ছি পানি ময়লা ধরনের। গতবারের মতো রিল্যাক্স পাচ্ছি না।'
আরেকজন বলেন, 'পানি লালচে ধরনের। এই কারণে বেশিক্ষণ গোসল করি নাই। স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কায় উঠে এসেছি।'
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন ব্লুম বা ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের আধিক্যের কারণে পানির এমন পরিবর্তন হয়ে থাকে। যার প্রভাব থাকতে পারে দুই থেকে সাত দিন পর্যন্ত। এর কারণে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মকভাবে কমে যায়। পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়ে ওই এলাকার মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর জীবন। বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবার সাথে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বোরি) বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিপাশা সূর বলেন, 'যেহেতু ব্যাকটেরিয়া কারণে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন ব্লুম হয় তাহলে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে সরাসরি চোখে, স্কিনে।'
মূলত ঘূর্ণিঝড় রিমালের পরই কক্সবাজার সমুদ্র অঞ্চলে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন ব্লুম ঘটেছে যা নিয়ে ইতোমধ্যে গবেষণা শুরু করেছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার রাতে সমুদ্র থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ এবং আধিক্য দেখা দেয়া ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের প্রজাতি নির্ধারণের কাজ শুরু করেছেন তারা।
বোরি এনভায়রনমেন্টাল ওশানোগ্রাফি এন্ড ক্লাইমেট বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মীর কাশেম বলেন, 'ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন ব্লুম হয় তখন কিছুদিন পর ব্যাকটেরিয়া মারা গেলে সেখানে অক্সিজেনের লেভেল কমে যায় সেখানে।'
নানা কারনে মাঝেমধ্যেই সমুদ্রে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন ব্লুম ঘটে এবং সমুদ্রের পরিবেশের উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ক্ষতি থেকে রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্রকে ভালো রাখা ও সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে চলছে নিরন্তর গবেষণা।