পরিবেশ ও জলবায়ু
0

জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব সারাবিশ্বে

চরম ঝুকিঁপূর্ণ হয়ে উঠছে বিশ্বের ভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া। কোথাও তীব্র বন্যা, কোথাও সূর্যের প্রবল উত্তাপে পুড়ছে জনপদ। জলবায়ুর এমন ক্ষতিকর প্রভাবে হুমকিতে পড়ছে মানুষের জীবন-জীবিকা। প্রাণও যাচ্ছে অনেক মানুষের। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বসতভিটা, কৃষিজমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। দেশে দেশে তৈরি হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট।

জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে ধুঁকছে পুরো বিশ্ব। অতিবৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির শিকার হতে দেখা গেছে মরুর দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও ব্যাপক বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।

বন্যা ও ভূমিধসের কারণে পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা ২০০ ছুঁই ছুঁই অবস্থা। অনেকে ছুটছেন নিখোঁজ প্রিয়জনের সন্ধানে। এছাড়া বেশিরভাগ অঞ্চলের রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে আছে। নষ্ট হয়ে গেছে আবাদি ফসল। এতে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, জীবন-জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন সবাই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। এর মাঝেই আরও বৃষ্টির পূর্বাভাসে বেড়েছে দুশ্চিন্তার ভাজ।

স্থানীয় একজন বলেন, 'রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পণ্য আনা-নেয়া করা যাচ্ছে না। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক মানুষের মৃত্যুর খবর দুর্ভাগ্যজনক।'

এদিকে ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ১০৪টি পৌরসভায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে বুধবার (১ মে) একদিনেই প্রাণ গেছে আটজনের। নিখোঁজ রয়েছে বেশ কয়েকজন। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১ হাজার ৪০০ এরও বেশি মানুষ। নদী অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। তাই রাজ্যজুড়ে বন্যার ঝুঁকির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

ব্রাজিলের একজন বলেন, 'আমি আমার বাড়িতে থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় বাড়ি ছাড়তে হয়।'

উল্টো চিত্র এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক প্রান্তে। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকায় দীর্ঘ হচ্ছে বৃষ্টির অপেক্ষা। এরমধ্যে ভারত অন্যতম। যেখানে হিটস্ট্রোকে মানুষের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, দেশটির কমপক্ষে ২৯টি শহরে ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে টিন দিয়ে তৈরি বাড়িঘরে সববাস করায় বস্তিবাসী ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তপ্ত রোদ থেকে আশ্রয় নেয়ার ঠাঁই নেই অনেকের। স্বস্তি পেতে কিছুক্ষণ পর পর গায়ে পানি ঢালছে অনেকে।

এদিকে তাপপ্রবাহে ধুঁকছে আফগানিস্তান, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সসহ বহু দেশ। মাঠ-ঘাট ফেটে চৌঁচির হওয়ায় ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে কৃষকদের। এরইমধ্যে সেচের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেক ফসল। আর্থিকভাবে লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা। বাড়ছে কৃষিপণ্যের দাম বাড়ার ঝুঁকি।

এসএস