জুলাই বিপ্লবে দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে যেমন কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়ে তেমনি সংকটে পড়ে বন্দর ও কাস্টমস হাউসের স্বাভাবিক কার্যক্রম। পণ্য ডেলিভারি ব্যাহত হওয়ায় জমে যায় কনটেইনারের স্তূপ। এতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে সরকারের রাজস্ব আয়েও। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার বন্দর ও কাস্টমস হাউসের অপারেশনাল সমস্যাগুলো সমাধান করে কাজে গতিশীলতা বাড়াতে দুই দিনের সফরে চট্টগ্রামে আসেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
আজ (বুধবার, ২ অক্টোবর) সকালে প্রথমে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় সভা করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। সভা শেষে তিনি সিমলেস ও হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিতে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর নির্দেশনা দেন। মেইনটেন্যান্সে কম্পিউটার কাউন্সিলের উপর নির্ভরতার কারণে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সার্ভারে আপগ্রেডেশনের সময় সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মো আব্দুর রহমান খান বলেন, 'আমাদের প্রফেশনাল হতে হবে। আমাদের ইফিসিয়েন্সি লেভেল বাড়াতে হবে। আমাদের ক্লায়েন্ট ওরিয়েন্টেড হতে হবে। আমরা যেহেতু ব্যবসায়ীদের সার্ভ করি, তাদের প্রতি আমাদের সহমর্মী হতে পারি। আমরা দ্রুত তাদের সেবা দেবো। এবং সেই সেবাটা হবে সিমলেস, কোনোরকমের কোনো হয়রানি থাকবে না। এটাই হচ্ছে আমার মৌলিক নির্দেশনা।'
এরপর চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উঠে আসে কনটেইনার জট, স্ক্যানার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংকট, বিপজ্জনক পণ্য নিয়ে বন্দরের উৎকণ্ঠাসহ বিভিন্ন বিষয়। বর্তমানে বেসরকারি আইসিডিতে ৩৮টি পণ্য ডেলিভারি দেয়া হয়। জট নিরসনে আরও বেশি পণ্য অফডক থেকে ডেলিভারি দেয়ার অনুমতিসহ বিপজ্জনক পণ্য অপসারণ বা দ্রুত ধ্বংসের অনুমতি দিতে এনবিআরের চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানান বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, 'পোর্ট যদি সক্ষমতা বাড়ায়, আর কাস্টমস যদি পিছিয়ে থাকে তাহলে হবে না। একইভাবে কাস্টমসও যদি এগিয়ে যায়, পোর্ট পিছিয়ে থাকলে হবে না। সেজন্য আমরা চাচ্ছি যে, কাস্টমস এবং পোর্ট একত্রে আমাদের ইফিসিয়েন্সিটা বাড়ানোর, এটার রেভিনিউ জেনারেশনটা হবে অনেক বেশি। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাবো।'
বন্দরের বিভিন্ন দাবির জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বন্দর ও দেশের স্বার্থে প্রয়োজনে আইনকানুন সংশোধন করা হবে । এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীসহ সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে বেসরকারি অফডকে আরও বেশি পণ্য ডেলিভারি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
মো আব্দুর রহমান খান বলেন, 'আপনি অকশন করবেন, যা পড়ে থাকে তার থেকে অন্তত পাঁচটা বেশি। তাহলে ব্যাকলক কমানো সম্ভব, যা একসময় শূন্য হবে। আর যদি দেখা যায় যে, যা হয় তার চেয়ে আপনি কম করেন তাহলে ব্যাকলক বাড়বে। এটা খেয়াল রাখতে হবে।'
জুলাই বিপ্লবের কারণে রাজস্ব আদায় কমলেও সরকারের নানা মুখী পদক্ষেপ ও ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে শুল্ক কর দিলে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো আব্দুর রহমান খান।