চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার এলাকার মো. নাসির নাসের এক মেকানিক সকাল থেকেই কাজে নেমে পড়েন। কিন্তু বর্তমানে লোডশেডিংয়ের কবলে কাজে ব্যাঘাত ঘটছে তার। সময়মতো গ্রাহককে কাজ বুঝিয়ে না দিতে পারায় পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। একই অবস্থা অন্য ব্যবসায়ীদেরও।
তিনি বলেন, 'আমরা বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে আমাদের ক্ষতিম মুখে পড়তে হয়।'
তীব্র গরমে বাসা-বাড়িতে থাকাও দায় হচ্ছে সাধারণ মানুষের। জানালেন, বিদ্যুৎহীনতায় ভোগান্তির কথা।
স্থানীয়রা বলেন, চাঁদপুরে একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও আমরা চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। এজন্য আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আগে লোডশেডিং হলে সহ্য করা যেত আর এখন তো সহ্য করা যায় না। কারণ গরম বেড়েছে। ১ ঘণ্টা থাকলে ৩ ঘণ্টা থাকে না।
দুই দফায় ১৫ মাস বন্ধ থাকার পর গত মে মাসে পুনরায় উৎপাদনে ফেরে চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিট। ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও গ্যাসের অভাবে বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে ৩০ থেকে ৭০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি। গ্যাসের সংকটে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেড়েছে খরচও।
গ্যাস টারবাইন ইউনিটের পাশাপাশি ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন স্টিম টারবাইন ইউনিটটি সচলে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ পৌঁছেছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। চলতি মাসেই চীন থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন যোগ দেবে মেরামতের কাজে। বিদ্যুৎ সংকট দূর করতে শতভাগ উৎপাদন করা জরুরি বলে মনে করেন ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ নূরুল আবছার।
তিনি বলেন, 'কখনো ১০০ আবার কখনো বা ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়ে আমাদের চলতে হয়। যেটা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য খুব খারাপ। কম মেগাওয়াটে অনেক বেশি গ্যাস আমাদের পোড়াতে হয়। কিন্তু এর ফল পাই না। তাই আমাদের ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা খুব জরুরি।'
বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিটের যন্ত্রাংশ কেনা ও মেরামতের কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার ডলার। এছাড়া স্টিম টারবাইনের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।