যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ, ভারতের ট্রানশিপমেন্ট বাতিল কিংবা রমজান পরবর্তী আবার ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি। বাণিজ্য ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যখন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন আরও একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন তখন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা।
ট্রানশিপমেন্টের ব্যাপারে উপদেষ্টা জানান, হঠাৎ করে ভারতের পক্ষ থেকে এই সুবিধা বাতিলের পর সরকার দেশটির চেয়েও কম খরচে বাংলাদেশ থেকে কার্গো পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, 'টিকফা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। এটা আমাদের মূলত ইউএসটিআরের সাথে, এটা এমন একটা অফিস একেবারে হোয়াইট হাউজের উল্টো পাশের অফিস যেখানে এই শুল্ক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ শুল্কের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, সরকার ওই শুল্কের তিন মাসের স্থগিতাদেশের সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির হিসেবে ভিসা কার্ড, গুগল-ফেইসবুকের মতো বাংলাদেশে ব্যবসা করা দেশটির বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের হিসেব আনছে না উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। জানান, দেশটি থেকে তুলা আমদানিরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সব দিক নিয়ে আসছে সপ্তাহেই একটি দল যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি এবং যদিও বৈশ্বিকভাবে তারা এটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা আশা করি যে, যে পরিকল্পনায় আমরা এগোচ্ছি সে কারণেই আমরা তাদের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে বোঝার চেষ্টা করছি যে, আকাঙ্ক্ষাটা যেহেতু মৌলিকভাবে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং আমি নিশ্চিত যে যুক্তরাষ্ট্রও উপলব্ধি করে যে এটা একদিনে সম্ভব নয়।'
বাজারে ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও চালের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন করা হয় সরকারের এই উপদেষ্টাকে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, 'সয়াবিন তেল না নিয়ে এসে আমরা তেল বীজ আনার চেষ্টা করছি। যার ফলে আমাদের ক্রয়মূল্য আরও কমে। এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমার ক্ষেত্রেও এটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।'
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে উপদেষ্টা জানান, কারও সঙ্গে ব্যবসা করতে আপত্তি নেই বাংলাদেশের।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, 'পাকিস্তান হোক, ভারত হোক বা চীন হোক, কারও সাথে ব্যবসা করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কারণ মার কাছে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ সবার আগে।'
উপদেষ্টা জানান, দীর্ঘ সময়ের একটা কর্তৃত্ববাদী শাসনামলের পর লন্ডভন্ড অর্থনীতিতে সরকার ইনসাফ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। ঋণ করে পরিচালনার পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার এবং ৫ আগস্টের পর অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক দায় পরিশোধ করেছে সরকার যোগ করেন তিনি।