চুক্তি
অর্থনীতি
0

একীভূত হচ্ছে এক্সিম ও পদ্মা ব্যাংক

শ‌রীয়াহভি‌ত্তিক বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে দুই ব্যাংকের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন হবে।

এক্সিম ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।

এ বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের ভাইস-চেয়ারম্যান একেএম নুরুল ফজল বুলবুল এখন টিভিকে নিশ্চিত করে জানান, দুই ব্যাংকের মধ্যে একীভূতকরণের প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে ব্যাংক দুটির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে জানা‌নো হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংক হেলথ ইনডেক্স অ্যান্ড হিট ম্যাপ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে দেশের ৩৮টি ব্যাংককে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২টির অবস্থা খুবই খারাপ।

এছাড়া ৯টি ব্যাংক এরই মধ্যে রেড জোনে চলে গেছে। অপর ৩টির অবস্থান ইয়েলো জোনে অর্থাৎ রেড জোনের খুব কাছাকাছি রয়েছে।

চলতি বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবলের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক মার্জারের বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছে। সেখানে ব্যাংকগুলোকে নিজেদেরকে একীভূত হওয়ার সুযোগ রাখা হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রথম দুটি তফসিলি ব্যাংক মার্জার হতে যাচ্ছে।

দুটি ব্যাংক একীভূত হলে, মূল চ্যালেঞ্জ হবে কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ চালিয়ে নেয়া, এমনটাই মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির।

তিনি বলেন, 'দুটো ব্যাংকই কিন্তু আর্থিক খাতের জন্য কাজ করছে। যদিও তাদের ধারাটা ভিন্ন কিন্তু ব্যাংক খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি ও গতিশীলতা নিয়ে আসার উদ্দেশ্য তাদের এক। এখানে সমস্যা হতে পারে কারণ দুই ব্যাংকের কর্মীরা ভিন্ন রকম। তাদের অভিজ্ঞতা ও কর্ম পদ্ধতিতে বড় রকমের ব্যবধান রয়েছে।'

গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো ব্যাংক চাইলে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে ডিসেম্বরের মধ্যেই একীভূত হওয়ার উদ্যোগ নিতে পারে। ডিসেম্বরের পর ব্যাকের অবস্থা বুঝে বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানানো হয়।

এদিকে ভালো করা একটি শরিয়াহ ব্যাংক সুদভিত্তিক ব্যাংকের সঙ্গে কতটা ভালো করবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

তিনি বলেন, 'এ দুইটা ব্যাংক যখন একীভূত হচ্ছে। তখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ব্যাংকিং প্রক্রিয়াটা। তাদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন পদ্ধতিতে তারা কার্যক্রম চলমান রাখবে। ইসলামিক শরীয়া মতে নাকি সুদভিত্তিক ব্যাংকিং? এখন গ্রাহকদের মধ্যে একটা নেতিবাচক ধারণা আসতে পারে। একবার পদ্মা ব্যাংকে ডিপোজিট রেখে তারা সর্বস্ব হারিয়েছে। এখন এক্সিম ব্যাংক যেহেতু তাদের নিচ্ছে, তারাও একটা হুমকির মুখে পড়তে পারে।'

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, একীভূতকরণের এ প্রক্রিয়ায় কোনো কর্মী চাকরি হারাবে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় একীভূতকরণ হয়েছে সেই প্রক্রিয়াই এখানে অনুসরণ করা হবে। এতে কোনো ব্যাংক অবসায়নে যাবে না। শুধু দুটি ব্যাংক এক সঙ্গে যোগ হয়ে একটি ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ বিষয়ে বলেছিলেন, ‘আমানতকারী ও তাদের আমানতকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে। এতে আমানতের শতভাগ নিশ্চিত থাকবে। কোনো আমানত হারাবে না।’

আসু

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর