সুমি-এনামুল দম্পতি থাকেন সাভারের কলমা এলাকার একটি টিনশেড বাড়ির ছোট্ট একটি ভাড়া রুমে। খরচ বাঁচাতে দুই সন্তানকে রেখেছেন গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায়। স্বামী-স্ত্রী দুজনে কাজ করেন একটি তৈরি পোশাক কারখানায়।
দোরগোড়ায় ঈদুল ফিতর। তবে ঈদের আনন্দকে ছাপিয়ে দুশ্চিন্তা ভর করেছে সুমি আক্তারের মনে। সারামাসের খরচ আর বাসা ভাড়া মিটিয়ে হাতে যা থাকে, তা দিয়ে সন্তান ও স্বজনদের জন্য নতুন পোশাক কেনা নিয়ে দুশ্চিন্তা যেন যায় না।

সাভারের পোশাক শ্রমিক সুমি। ছবি: এখন টিভি
পোশাক শ্রমিক সুমি আক্তার বলেন, 'এখানে যদি আমি আমার জন্য মার্কেট করি তাহলে আমার ছেলে-মেয়েদের জন্য মার্কেট হয় না। আর ছেলে-মেয়েদের জন্য মার্কেট করলে আমার মার্কেট হয় না। যে টাকা বেতন পাই, টাকায় আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ নাই।'
পোশাক শ্রমিক এনামুল হক বলেন, 'সামনে ঈদ আছে, বাবা-মার জন্য কিছু কিনবো সেটাও হচ্ছে না।'
শুধু সুমি আক্তার নন, একই কণ্ঠে দুঃখপ্রকাশ করেন আরেক পোশাক শ্রমিক সান্ত্বনা আক্তার। হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরও ঈদের আনন্দ তার কাছে অধরা।
পোশাক শ্রমিক সান্ত্বনা আক্তার বলেন, 'আমাদের কাছে সব দিনই সমান। আমাদের কোনো ঈদ নাই। আমরা ঠিকমতো চলতে পারি না। ঈদে নতুন কিছু দিতেও পারি না ছেলে-মেয়েদের।'
বলা হয় ঈদ মানে আনন্দ। তবে যারা ঈদে এক টুকরো নতুন কাপড়ের জন্যও হিমশিম খান, তাদের কাছে ঈদের অর্থই আলাদা।
শ্রমিকদের মধ্যে একজন বলেন, 'গরিবের আবার ঈদ। আমরা যে বেতন পাই সে বেতন দিয়ে নিজেরাই চলতে পারি না। ঈদে আমাদের কোনো উৎসাহ নেই।'
তবুও ঈদের ছুটিতে শহরের কোলাহল ছেড়ে প্রিয়জনের কাছে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন শ্রমিকেরা। ছুটি শেষে নতুন দিনের কর্মব্যস্ততায় ফিরবে তাদের জীবন।