চিরচেনা মেশিনের শব্দে আবারো কর্মমুখর তৈরি পোশাক শিল্প। কারো দিকে কারো তাকানোর ফুসরত নেই। পোশাক-সেলাই থেকে মান পরীক্ষা, আয়রন, ফিনিশিং প্যাকেজিংয়ে ব্যস্ত সব শাখা।
কারখানার চাকা না ঘুরলে বেতন হবে না, বন্ধ হবে জীবিকার পথ। চলমান কয়েক দিনের কারফিউতে অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠায় দিন কেটেছে শ্রমিকদের। তাই কাজে ফিরতে পেরে স্বস্তিতে শ্রমিকরা। তাদের উপস্থিতিও ছিল সন্তোষজনক।
শ্রমিকদের একজন বলেন, 'আসতে কোনো সমস্যা হয়নি। কাজ করতে ভালোই লাগছে। আর আমাদের তো বসে থাকলে তো চলবে না।'
আরেকজন বলেন, 'কারখানা বন্ধ থাকলে আমাদের লস কোম্পানিরও লস। এখন কারখানা খোলায় আমরা খুশি।'
পোশাক শিল্প মালিকরা বলছেন, টানা কয়েক দিনের কারখানা বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া কঠিন হবে। এ ছাড়া কত অর্ডার বাতিল হবে, কি পরিমাণ পোশাকের দাম কমবে ও বিমানে পাঠাতে হবে, তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।
চট্টগ্রামে পরিবেশ ভালো থাকায় এই শিল্পের স্বার্থে, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসে নিজস্ব নিরাপত্তায় কারখানা চালু করা হয়েছে। তবে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৭ দিনের জন্য ব্যাংকের সুদ মওকুফ করার দাবি জানিয়েছেন বিজিএমইএ নেতারা।
বিজিএমইএ'র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করছি এই ৭ দিনের ব্যাংকের সুদ মওকুফ করা হয়।'
কেডিএস গ্রুপের মো. সেলিম রহমান বলেন, 'গত কয়েকদিনে যে প্রোডাকশন লস হয়েছে তা আমরা কাভার করতে পারবো না।'
উদ্যোক্তারা বলছেন, স্থিতিশীলতা না থাকলে পোশাকের ক্রয়াদেশই শুধু বাতিল হবে না, বাজার দখলে নেবে প্রতিযোগী অন্য দেশ।
বিভিন্ন পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে চট্টগ্রামে শিল্প পুলিশের প্রধান জানান, চট্টগ্রামে প্রায় সত্তর শতাংশ পোশাক কারখানা চালু হয়েছে। শ্রমিকদের পরিবহণ এবং পোশাক কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে জোনভিত্তিক টহল জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে পৃথক সেল।
চট্টগ্রামের শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. সোলায়মান বলেন, 'র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে পৃথক সেল করে নাশকতা ঠেকাতে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।'
তিনটি ইপিজেড মিলে চট্টগ্রামের ছয় শতাধিক পোশাক কারখানায় কাজ করে প্রায় ১৩ লাখ শ্রমিক।