দেশে বছরে যে পরিমান কাঁচা চামড়া দরকার তার প্রায় ৫৫ শতাংশই কোরবানি ঈদে সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, এ বছর ১ কোটি পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করবে ৮০-৯০ লাখ পিস।
কোরবানির ঈদের দিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে নিয়ে যাওয়া হয়। লবণ মাখানো থেকে শুরু করে তা সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছে ট্যানারিগুলো। এসব চামড়া ড্রামে হোয়াইট ব্লু করার পর আবারও লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করা শুরু করবে ব্যবসায়ীরা। আর এই বেশিরভাগ লবণযুক্ত চামড়া রাজধানীর পোস্তা থেকে সংগ্রহ করবে ঢাকার ট্যানারি ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও বিভিন্ন জেলার চামড়া হাট থেকেও সংগ্রহ করা হয় লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া।
দেশের অন্যতম বড় পোস্তা কাঁচা চামড়ার আড়ৎগুলোর এখন চামড়া বিক্রি করা নিয়ে অপেক্ষা। এবছর কাঁচা চামড়া ক্রয়ে খুশি তারা। জানান, ট্যানারি মালিকদের থেকেও ভালো দাম পাবেন তারা।
বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের তথ্য মতে, এবছর পোস্তার কাঁচা চামড়ার আড়ৎ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ব্যবসা করবে আড়ৎদাররা। যেখানে একসময় ব্যবসা হতো শত কোটি টাকার। এদিকে পোস্তা চামড়ার গুণগত মান দেশের অন্যান্য যেকোন জায়গার লবণযুক্ত চামড়ার চেয়ে ভালো বলে দাম নিয়ে খুব একটা সমস্যা হবে বলেও জানায় সংগঠনটি।
বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্টস এসোসিয়েশন এর চেয়ারম্যান মো. আফতাব খান জানান, ‘অত্যাধিক গরমে চামড়া নষ্ট না হলে লোকসান হওয়ার সম্ভবনা নেই’।
এদিকে কোরবানি ইদের পর থেকে প্রায় এক মাস লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করবে ট্যানারিগুলো। তবে চামড়ার বিভিন্ন গ্রেড থাকায় দাম নিয়ে কিছুটা সংশয়ে ট্যানারি ব্যাবসায়ীরা। ট্যানার্স এসোসিয়েশন বলছে, চামড়া সংগ্রহ নয়, রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে চামড়ার দাম নিয়ে বিশ্ব বাজারে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, 'বাণিজ্য মন্ত্রনালয় দাম নির্ধারণ করে দেয়, কিন্তু চামড়ার দাম নির্ভর করে মানের উপর। আমাদের দেশে চামড়ার মান আগে ছিল ১-৮ পর্যন্ত। এখন যার মান ১-১০। অর্থাৎ মান আরও ২ গ্রেড কমেছে। চামড়া ক্রয়ের সময় এই বিষয়গুলোও খেয়াল রাখতে হয়'।
এবছর ঢাকায় চামড়ার দাম বর্গফুট প্রতি ৫৫-৬০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫০-৫৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।