আড়তে স্তূপ করে রাখা হয়েছে লবণ দেয়া চামড়া। সারিসারি চামড়ার স্তূপ ঢেকে দেয়া হয়েছে পলিথিন দিয়ে। তারপরও বৃষ্টির পানি নিচ দিয়ে চামড়ায় আসছে। কোথাও কোথাও টিনের চালার ফুটো দিয়ে পানি পড়ছে চামড়ায়।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় চামড়ার হাট শম্ভুগঞ্জে গিয়ে দেখা মেলে এমন পরিস্থিতির। কাঁচা চামড়া কিনে এবার চরম বেকায়দায় আড়তদাররা। বৃষ্টির কারণে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তাদের।
গত বছরের চেয়ে ১০০-২০০ টাকা বেশি দামে চামড়া কিনেছেন আড়তদাররা। আকার ও প্রকারভেদে গরুর চামড়ার দাম পড়েছে ৫০০-৮০০ টাকা। সোমবার রাত থেকেই শুরু হয় চামড়ায় লবণ দেয়ার কাজ। কিন্তু বৃষ্টির বাগড়ায় তা শেষ হয় মঙ্গলবার দুপুরে।
সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও নির্ধারিত দামে চামড়া কিনেন না ট্যানারি মালিকরা। সিন্ডিকেট করে মনগড়া দামে চামড়া কিনায় ক্ষতির মুখে পড়েন স্থানীয় আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা। কাঁদা পানিতে হাটের বেহাল অবস্থায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ তাদের কপালে।
তারা বলেন, বৃষ্টির কারণে চামড়ার রঙ নষ্ট হয়ে যাবে এবং চামড়া নষ্টও হয়ে যেতে পারে। বৃষ্টিতে চামড়া ভিজে গেছে। এখন আমরা দ্রুতবেগে লবণ দিচ্ছি। এটা নিয়া আমরা খুব চিন্তার মধ্যে আছি।
এদিকে কিনার পর লবণসহ সংরক্ষণ করতে চামড়া প্রতি খরচ হয় আরও আড়াইশো টাকা। নগদে চামড়া কিনলেও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতে হয় বাকিতে। বছরের বছরের পর ঘুরেও আদায় করা যায় না পাওনা টাকা।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, চামড়া কিনার জন্য সরকার ঋণ সুবিধা দিলেও তা ঢাকার বাইরে আসে না। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাওনা পরিশোধ এবং নির্ধারিত রেটে চামড়া কিনার জন্য ট্যানারি মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, 'সরকার নির্ধারিত দামে যদি ট্যানারি মালিকরা চামড়া কিনেন তাহলে আমাদের প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।'
প্রতি শনিবার শম্ভুগঞ্জ চামড়া হাটে চামড়া বেচাকেনা হয়। কোরবানির মৌসুমে প্রায় ৪ লাখের বেশি গরুর চামড়া আসে এই হাটে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। তবে বিক্রি না হওয়ায় যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে ছাগলের চামড়া।