কৃষি , শিল্প-কারখানা
অর্থনীতি

রপ্তানি সম্ভাবনা থেকেও প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না বগুড়ার কৃষি যন্ত্রাংশ

রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি করেও চীনের পণ্যের দাপটে বাজারে টিকতে পারছে না বগুড়ার পাম্প। জ্বালানি-কাঁচামালের দামের উর্ধ্বগতিতে উৎপাদন খরচ বাড়ায় গতবছর বেশ কমেছে রপ্তানি। ফাউন্ড্রি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা কৃষি যন্ত্রাংশের হাজার কোটি টাকার বাজার ঠিক রাখার তাগিদ দেন ব্যবসায়ীরা।

কৃষিতে সেচ ও জমি চাষের জন্য ডিজেল চালিত এসব ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের জন্য বিখ্যাত বলা হয় শিল্প শহর বগুড়াকে।

দিনকে দিন এসব ইঞ্জিনের চাহিদা যখন কমতে থাকে তখন সাড়া ফেলে বগুড়ার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প। দেশের বাইরে বেশ চাহিদা তৈরি হয় পাশের দেশ ভারতেও। পানির পাম্প রপ্তানি করে আসতে থাকে বৈদেশিক মুদ্রা।

২০১৮ সালে ভারতে পাম্প রপ্তানি করে বগুড়ায় আসে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪শ’ ডলার। তবে গেল বছর ২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের বেশি রপ্তানি করতে পারেননি এখানকার ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, করোনাকালে প্রথম ধাক্কা লাগে এখাতে। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই জ্বালানি আর কাঁচামালের দামের উর্দ্ধগতিতে চীনের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না এখানকার পাম্প ও যন্ত্রাংশ।

ফাউন্ড্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আবদুল মালেক আকন্দ বলেন, 'ইন্ডিয়াতে আমাদের ব্যাপকভাবে পাম্প গিয়েছে। এখন একটু কম হচ্ছে। কম হওয়ার কারণ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের টেকনোলজি চলে আসছে। '

বগুড়া বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আজিজার রহমান মিলটন বলেন, 'ভারতে চায়না পাম্প বিক্রি করতে চাচ্ছে সেখানে আমরাও বাংলাদেশ থেকে বিক্রি করার চেষ্টা করছি। প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে আমরা চায়নার সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছি না।' 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দফায় দফায় বাড়ছে স্ক্র্যাপ, হার্ডকোক, পিগ আয়রন, সিলিকন ও ম্যাঙ্গানিজের মতো কাঁচামাল ও জ্বালানি দাম। সম্ভাবনাময় এ রপ্তানীখাতে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে ভ্যাট, ট্যাক্স বিবেচনায় নিয়ে বাড়াতে হবে সুযোগ-সুবিধা। আর ভারতের পাশাপাশি অন্য দেশগুলোতেও বাজার খোঁজার পরামর্শ ব্যবসায়ী নেতাদের।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম রাজ বলেন, 'ভারতে পাশাপাশি অন্য যেসব কৃষি প্রধান দেশ সেখানেও যদি রপ্তানি করার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে শিল্পটা বেচে যাবে।'

ভারতের বাইরে অন্যান্য দেশে বাজার খোঁজার আগে নিজেদের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন যেমন জরুরি তেমনি বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন যন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ নিতে না পারলে টিকে থাকা কঠিন হবে বলছেন ব্যবসায়ী নেতারাও।

ফাউন্ড্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, 'কেমিক্যাল টেস্ট প্রত্যেকটা শিল্প প্রতিষ্ঠানে লাগবে। সেটা আমরা এখনো করতে পারি নাই যেকারণে পিছিয়ে আছি।'

বগুড়া রপ্তানি এখাতে ধাক্কা সামলে উঠতে না পারলে এর আঘাতে নড়বড়ে হবে ফাউন্ড্রি ও হালকা প্রকৌশল শিল্পের ওপর ভ করে বগুড়ায় গড়ে ওঠা হাজার কোটি টাকার বাজার- শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর