অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় সেফটি বা ফাংশনাল জুতার বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ক্যাটারপিলার, টিম্বারল্যান্ড, ড.মার্টিন, আরিয়াট বা ওলভারিন। এমন নানা ধরনের ৪ লাখ জোড়া জুতা প্রতিমাসে তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রামের গোল্ডেন চ্যাং জুতা কারখানায়। তাইওয়ানভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানের চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার চারটি কারখানায় বছরে তৈরি হচ্ছে ১০ মিলিয়ন বা ১ কোটি জোড়া জুতা। বাহারি ডিজাইন, আলাদা মান ও আকারের এসব জুতার কোন কোনটির দাম ৩শ' ডলার পর্যন্ত।
কাটিং ইনচার্জ ইসরাত জাহান বলেন, বর্তমানে এই কারখানায় সাড়ে ৬ হাজারের মতো শ্রমিক কাজ করে। আমাদের ব্রান্ডগুলোর কাছে আমরা খুব পরিচিত যে চট্টগ্রাম গোল্ডেন চ্যাং কারখানায় ভালো জুতা তৈরি হয়।
উন্নত দেশে নির্মাণ কাজে, ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে বা ফ্যাশন সচেতনদের কাছে এই জুতার রয়েছে আলাদা কদর। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল, ইউরোপের বড় বাজার ছাপিয়ে জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া কিংবা এশিয়ার বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের অর্ধশতাধিক অঞ্চলে এসব জুতার চাহিদা বাড়ছে। গবেষণা বলছে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে এমন জুতার চাহিদা বাড়বে ৬ শতাংশ।
উৎপাদন এবং নিমার্ণকাজে ব্যাপক চাহিদা বাড়ায় এখন সেফটি জুতারও চাহিদা বাড়ছে। ২০২৩ সালে যার বাজার ছিল ১১.৬ বিলিয়ন ডলার। ধারণা করা হচ্ছে ২০৩৩ সালে এই বাজার পৌঁছাবে ২৩.৬ বিলিয়ন ডলারে।
তাইওয়ানভিত্তিক জুতা উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালে দুটি ইপিজেডে তাদের বিনিয়োগ করে। বর্তমানে এদেশে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মাত্র ১৪ জন দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এখানে কাজ করছে ২০ হাজার কর্মী।
গোল্ডেন চ্যাং সুজ বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মি. কেনি হো বলেন, 'বিশ্বের অনেক দেশে পৌঁছে যাচ্ছে আমাদের জুতা। যা বাংলাদেশ ও আমাদের জন্য গর্বের। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ শ্রমিকের অধিকারকে সম্মান করি।'
খারাপ আবহাওয়া, ধারালো-দাহ্য-ভারী বস্তু থেকে সুরক্ষাসহ নানা কাজে বেশ নিরাপদ বাংলাদেশে তৈরি জুতা। ব্যবহার হয় যুদ্ধক্ষেত্র, নির্মাণ, উৎপাদন, তেল-গ্যাস উত্তোলন, রাসায়নিক কারখানাসহ নানা শিল্পে। তাই তৈরির সময় নিশ্চিত করা হয় সর্বোচ্চ মান।
গত অর্থবছরে এই প্রতিষ্ঠান দেশের রাজস্ব আয়ে যোগ করেছে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মেড ইন বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার পাশপাশি এখানকার অর্থনীতি ও নারীর ক্ষমতায়নে বেশ আগ্রহী প্রতিষ্ঠানটি।