চারটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যের একমাত্র স্থলবন্দর পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা। বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালের সাথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সুযোগ রয়েছে এই স্থলবন্দর দিয়ে।
বতর্মানে নানা সংকটে স্থলবন্দরটির আমদানি-রপ্তানি আগের তুলনায় নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে। মূলত পাথর আমদানি নির্ভর স্থলবন্দরটিতে আগে দিনে ৩০০ থেকে ৩৫০টি আমদানির ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করলেও, এখন তা নেমেছে ৭০ থেকে ১০০টিতে। এছাড়া কমেছে রপ্তানির পরিমাণও। দৈনিক রপ্তানি পণ্যবাহী গাড়ি যাচ্ছে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের রাজ্য সরকার ভুটানে পণ্যবাহী গাড়ির উপর স্লট বুকিং চার্জ চাপিয়ে দেয়ায় গেল ৪ জানুয়ারি থেকে ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে ভারত পাথর রপ্তানি করলেও নিম্নমানের পাথর হওয়ায় আমদানিতে অনীহা ব্যবসায়ীদের।
একজন পাথর ব্যবসায়ী বলেন, 'এখানে যারা শ্রমিক আছে, যারা ব্যবসায়ী আছে, যাদের ক্রাশিং মেশিন আছে, আমরা আশা করি যদি আবার আগের মতো পাথর ঢোকে তাহলে সবার জন্য তা লাভজনক হবে।'
এদিকে আমদানি কমায় বন্দরে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কমছে সরকারের রাজস্ব আয়ও। পাশাপাশি বন্দরের সাথে জড়িত শ্রমিক ও পাথর ভাঙা শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছেন।
একজন শ্রমিক বলেন, 'আমরা প্রায় ৫০০ শ্রমিক এখানে কাজ করি। এখন ১০০ জনও কাজ পাচ্ছে না। ৪০০ শ্রমিক আমাদের বেকার পড়ে থাকে।'
তবে সীমিত পরিসরে ভারত থেকে আসছে আতপ চাল। তিন দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসে চলমান সমস্যা সমাধানের তাগিদ ব্যবসায়ী নেতাদের।
পঞ্চগড় আমদানি রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান খান বাবলা বলেন, 'বাংলাদেশি আমদানিকারক, ভারতের রপ্তানিকারকদের যৌথভাবে বসতে হবে। এই বিষয় নিয়ে আরও খোলাখুলি আলোচনা করা উচিত। যেহেতু সরকার চেষ্টা করছে ব্যবসা-বাণিজ্যকে সাহায্য করার জন্য। এই সুযোগটা আমরা নিতে পারি।'
বন্দরের কার্যক্রম গতিশীল করতে পাথরের পাশাপাশি বাণিজ্যিক পণ্য আমদানির আহ্বান বন্দর কর্তৃপক্ষের।
বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'পাথর নির্ভর হওয়ার কারণে কোনো কারণে যদি পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সাধারণত দেখা যায় যে বন্ধরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে আরও বেশি উন্নত করে অন্যান্য পণ্য যেন আমদানি-রপ্তানি করা হয় সে বিষয়ে দেকর জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ।'
ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ হওয়ায় প্রভাব পড়েছে স্থানীয় পাথরের বাজার ও নির্মাণ শিল্পে। তাই দ্রুত সমস্যা সমাধান চান বন্দর সংশ্লিষ্টরা।