ঈদের আগে ও পরে মোট ছয় দিন মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। সেই সঙ্গে ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের কার্যক্রম অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও ব্যাংক, কাস্টম হাউসসহ আমদানি রপ্তানির সঙ্গে সম্পৃক্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তাই ঝুঁকি এড়াতে ঈদের ছুটির আগেই রপ্তানি পণ্য জাহাজে তুলতে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে পাঠিয়ে দেন তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানিকারকরা। এ সুযোগে প্রতি বছর ভাড়া বাড়িয়ে দেন ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিকরা।
যদিও পোশাক শিল্প মালিকরা বলছেন, বৈশ্বিক মন্দায় পোশাকের অর্ডার কম থাকায় এবছর ঈদের আগে চট্টগ্রাম বন্দরমুখী রপ্তানি পণ্যের অতিরিক্ত চাপ নেই। এরপরেও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামমুখী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের ভাড়া বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার ভাড়া গিয়ে ঠেকেছে ২২ থেকে সবোর্চ্চ ২৮ হাজার টাকায়। এজন্য ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার ও আইসিডিগুলোর সমন্বয়হীনতাকে দুষছেন তারা।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বলেন, '৩০-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আমাদের ভাড়াগুলো বেড়ে যাচ্ছে। ১৫ হাজার টাকার ভাড়া এখন ৩০ হাজার টাকা। এ জিনিসটা মৌসুমি কিছু স্বার্থন্বেষী মহলের কারণেই এমনটা হচ্ছে। এটা থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে।'
যদিও ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিকদের দাবি, যথাসময় পণ্য খালাস করতে না পারায় রপ্তানি পণ্য নিয়ে আসা অনেক গাড়ি ডিপোতে আটকা পড়েছে। সেই সঙ্গে আন্তঃজেলার অনেক গাড়ি পণ্য ডেলিভারি দিয়ে আর না ফেরায় পরিবহন সংকটে কারণে ভাড়া বেড়েছে।
ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সুফিউর রহমান টিপু বলেন, 'ঈদের কারণে যেহেতু গাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। সে কারণে পণ্যের চাপ বাড়ে। তাই গাড়ির চাহিদাও বাড়তে থাকে। ভাড়াটাও এমনিতেই বেড়ে যায়।'
কয়েকটি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে দেখা যায় ডিপোর সামনে পণ্য বোঝাই গাড়ির কিছুটা জট থাকলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। যদিও অধিকাংশ কনটেইনার ডিপোর নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চালকরা। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, 'এবার আমরা সেই চাপ ততটা অনুভব করছি না। ঈদের পূর্বের কিছুটা চাপ আছেে। গাড়ি আনলোড করতে ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগছে এরকম কোন পরিস্থিতি নেই।'
ডিপোগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে ৫৭ হাজার এবং মার্চে এর চেয়ে মাত্র ৬৪৭ টিইইউএস বেশি অর্থাৎ ৫৭ হাজার ৭১৪ টিইইউস কনটেইনার রপ্তানির জন্য বন্দরে পাঠানো হয়েছে।
